শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:০৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কেন বাংলাদেশে সোনা ক্রেতাদের জন্য বেশি ব্যয়বহুল গৃহযুদ্ধ সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্র দেশের জন্য হুমকি: চিফ প্রসিকিউটর আফগানিস্তানের সংঘাত কমাতে ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক পদক্ষেপ পশ্চিম তীর দখলের বিল ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার জন্য হুমকি: রুবিও তিউনিসিয়া উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবি, মৃত অন্তত ৪০ মেসি–রোনালদোদের জাদু আগেই দেখিয়ে গেছেন পেলে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া বৈঠক বাতিল, কূটনৈতিক আলোচনা তীব্র বিতর্কিত কর্মকর্তাদের নির্বাচনে চায় না বিএনপি আসিয়ান সম্মেলন এড়িয়ে যাচ্ছেন মোদি, যাবেন না মালয়েশিয়া ৪৪তম বিসিএসে রিপিট ক্যাডার বিধি সংশোধনে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষর: ফেসবুকে সারজিস
শিরোনাম :
কেন বাংলাদেশে সোনা ক্রেতাদের জন্য বেশি ব্যয়বহুল গৃহযুদ্ধ সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্র দেশের জন্য হুমকি: চিফ প্রসিকিউটর আফগানিস্তানের সংঘাত কমাতে ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক পদক্ষেপ পশ্চিম তীর দখলের বিল ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার জন্য হুমকি: রুবিও তিউনিসিয়া উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবি, মৃত অন্তত ৪০ মেসি–রোনালদোদের জাদু আগেই দেখিয়ে গেছেন পেলে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া বৈঠক বাতিল, কূটনৈতিক আলোচনা তীব্র বিতর্কিত কর্মকর্তাদের নির্বাচনে চায় না বিএনপি আসিয়ান সম্মেলন এড়িয়ে যাচ্ছেন মোদি, যাবেন না মালয়েশিয়া ৪৪তম বিসিএসে রিপিট ক্যাডার বিধি সংশোধনে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষর: ফেসবুকে সারজিস
নোটিশ :
Eid Bazar ! Eid Bazar ! Held on 30th March Saturday @ Paterson Firemanhall, Adress 226 Walnut ST, Paterson, NJ 07522 /  9th International Women's Day Award Held on April 27, 2024 @ The Brownston, 251 West Broadway, Paterson, NJ .7522 Ticket 70 Dollar Per Person Get Tickets From www.eventbrite.com

প্রত্যাশার মুখে প্রশান্তির পরাজয়

রাজু / ৮৭ বার
আপডেটের সময় : শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:০৯ পূর্বাহ্ন
প্রত্যাশার মুখে প্রশান্তির পরাজয়

রফিকুল ইসলাম রাজুঃ

‘প্রত্যাশা’ এবং ‘প্রশান্তি’ দুটো একসাথে হয় না। যেখানে প্রত্যাশা আছে সেখানে প্রাশান্তি থাকে না। মানুষ চিরকালই প্রত্যাশার সঙ্গে বেঁচে থাকে। এই প্রত্যাশা কখনো প্রিয়জনের, কখনো জীবিকার, কখনো বা সমাজ-রাষ্ট্রের প্রতি। কিন্তু অনেক সময় এই প্রত্যাশার কেন্দ্রে এসে দাঁড়ায় সাংবাদিক—যিনি কেবল সত্যি তুলে ধরতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে যান ‘ভুল আশার কারিগর’।

আজকের সমাজে সাংবাদিক কেবল সংবাদদাতা নন, এক ধরনের “আশার প্রতীক” হয়ে উঠেছেন। তিনি যখন দুর্নীতির খবর প্রকাশ করেন, মানুষ আশা করে বিচার হবে। যখন নিখোঁজ কাউকে নিয়ে প্রতিবেদন করেন, পরিবার ভাবে—এবার হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে। যখন কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি দেখান, সাধারণ মানুষ ধরে নেয়, দিনবদলের সূচনা এবার সত্যি ঘটবে।

কিন্তু বাস্তব অনেক সময় নির্মম। প্রশাসন নড়ে না, বিচার হয় না, নিখোঁজরা ফেরে না। উন্নয়ন হয় কাগজে-কলমে, বাস্তবে নয়। তখনই মানুষ ক্ষুব্ধ হয়—এবং হাতের কাছে যে থাকে, সেই সাংবাদিককে দোষ দেয়।

“তোমরাই তো আশা দেখিয়েছিলে”, “তোমরাই তো বলেছিলে”—এই অভিযোগ শুনতে হয় তাকে, যে কিনা শুধু সমাজের আয়না ধরে রেখেছিল।

অনেকে আবার সাংবাদিকতাকেই দায়ী করেন—অতিরঞ্জিত শিরোনাম, নাটকীয় উপস্থাপনা, ‘ভিউ’ বা ‘রেটিং’-এর পেছনে ছোটা। এটি সত্য, কিছু কিছু সাংবাদিকতা দায়িত্বজ্ঞানহীন। তবে তার মানে এই নয় যে সব প্রত্যাশাভঙ্গের দায় সাংবাদিকের ঘাড়ে চাপানো যায়।

প্রত্যাশা তৈরি হয় মানুষের মনে, কিন্তু প্রত্যাশা পূরণ হওয়ার দায়িত্ব সবসময় সাংবাদিকের নয়। তথ্য তুলে ধরা আর ফল নিশ্চিত করা এক জিনিস নয়।

সাংবাদিকের দায়িত্ব সত্য বলার। পাঠকের দায়িত্ব, সেই সত্যকে বুঝে যথাযথভাবে গ্রহণ করা। সাংবাদিকতা যদি দায় এড়িয়ে চলে, তবে সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবার সমাজ যদি প্রত্যাশার ভার সাংবাদিকের কাঁধে চাপিয়ে দেয়, তবে সত্য বলার সাহস হারিয়ে যায়।

রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিষয়টি নিয়ে বিশ্লেষণ-

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় সাংবাদিকতা কেবল তথ্য পরিবেশনের মাধ্যম নয়; এটি একাধারে জনমত গঠন, রাষ্ট্রীয় জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং নাগরিক প্রত্যাশার ব্যাখ্যাকারী। তবে বাস্তবতা হলো—সাংবাদিক যখন কেবল তথ্য উপস্থাপন করেন, তখনও অনেক সময় সমাজ ও রাষ্ট্র তাকে ‘দোষী’ হিসেবে চিহ্নিত করে। বিশেষ করে যখন কোনো প্রত্যাশা পূরণ হয় না, তখন সংবাদমাধ্যম হয় অব্যর্থ হতাশার লক্ষ্যবস্তু।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সাংবাদিকতার ভূমিকা দ্বৈত প্রকৃতির। একদিকে, রাজনৈতিক দল ও প্রশাসন সংবাদমাধ্যমকে তাদের কর্মকাণ্ড প্রচারে ব্যবহার করে। উন্নয়ন প্রকল্প, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ কিংবা জনপ্রশাসনের ইতিবাচক বার্তা তুলে ধরতে তারা সংবাদমাধ্যমের উপর নির্ভর করে। অন্যদিকে, সাংবাদিক যদি সমালোচনামূলক বা গবেষণাধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেন—যা ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর স্বার্থের পরিপন্থী হয়—তাহলে তাকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’, ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ বা ‘অরাজনৈতিক উদ্দেশ্যসম্পন্ন’ বলে আখ্যায়িত করা হয়।

এই প্রেক্ষাপটে সাংবাদিক শুধুমাত্র তথ্য পরিবেশন করলেও, তা যদি রাজনৈতিক প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয় বা শাসকগোষ্ঠীর বিব্রত অবস্থার সৃষ্টি করে, তবে তার উপর দায় চাপানো হয়। ফলে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা রাজনৈতিক চাপের মুখে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

সামাজিক প্রেক্ষাপট: সামাজিকভাবে, জনগণ সাংবাদিকতার উপর একটি অব্যক্ত প্রত্যাশা পোষণ করে থাকে—এমনকি কখনো কখনো তা বাস্তবতার অতিরিক্ত হয়ে দাঁড়ায়। নাগরিকদের বিশ্বাস থাকে যে, সংবাদমাধ্যমে কোনো ঘটনা উঠে এলেই তার প্রতিকার হবে, বিচারের আশ্বাস মিলবে, কিংবা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ ঘটবে। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে এই প্রত্যাশা অনেক সময় পূরণ হয় না।

যখন প্রত্যাশিত ফলাফল আসে না—যেমন নিখোঁজ ব্যক্তি ফেরত আসে না, দুর্নীতির বিচার হয় না, বা উন্নয়ন থমকে যায়—তখন সাধারণ মানুষ অনেক সময় সংবাদমাধ্যমকেই দায়ী করে। সাংবাদিকের ভূমিকাকে তারা কেবল ‘সংবাদদাতা’ হিসেবে নয়, বরং ‘সমস্যার সমাধানদাতা’ হিসেবে দেখতে চায়। এই দৃষ্টিভঙ্গি ভুল হলেও, তা আমাদের সমাজে দৃঢ়ভাবে বিদ্যমান।

পরিশেষে আমারা বলতে পারি সাংবাদিকতার মূল দায়িত্ব হলো—তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে সত্য প্রকাশ। কিন্তু রাজনৈতিক স্বার্থ ও সামাজিক প্রত্যাশার ভারে এই দায়িত্ব অনেক সময় ভুল ব্যাখ্যার শিকার হয়।

রাষ্ট্র যখন নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে চায়, তখন সাংবাদিক হয়ে ওঠেন ‘বিরোধী কণ্ঠ’।

আর সমাজ যখন নিজের অসহায়তা স্বীকার করতে চায় না, তখন সাংবাদিক হয়ে ওঠেন ‘অকর্মণ্য প্রচারক’।

এই দুই চাপের মাঝখানে সাংবাদিকতা টিকে থাকে বলেই গণতন্ত্র বেঁচে থাকে। সুতরাং প্রয়োজন, একটি সচেতন সমাজ ও দায়িত্বশীল রাষ্ট্রের সহাবস্থানে একটি স্বাধীন সাংবাদিকতা সংস্কৃতি গড়ে তোলা, যেখানে প্রত্যাশা ও বাস্তবতা—উভয়েরই সুস্থ সমন্বয় সম্ভব।

—–লেখক-সাংবাদিক


এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর