মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
জামায়াতের ভূমিকা দেশের মানুষ একাত্তরে দেখেছে: তারেক রহমান গোয়ার নাইটক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে ২৩ জন নিহত ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা-ভূমিধস: মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৯০০ ইমরান খানকে জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি আখ্যা হাস্যকর: পিটিআই জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব শুনানিতে সম্মত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনে তাপ–পানি সরবরাহ বিপর্যস্ত দক্ষিণ লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ওপর গুলিবর্ষণ বেনিনে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থান ঘোষণা, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট তালন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সিইসিসহ কমিশনারদের বৈঠক গাজায় স্থায়ী দখলদারিত্বের অবসানই অস্ত্র সমর্পণের শর্ত: হামাস
শিরোনাম :
জামায়াতের ভূমিকা দেশের মানুষ একাত্তরে দেখেছে: তারেক রহমান গোয়ার নাইটক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে ২৩ জন নিহত ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা-ভূমিধস: মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৯০০ ইমরান খানকে জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি আখ্যা হাস্যকর: পিটিআই জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব শুনানিতে সম্মত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনে তাপ–পানি সরবরাহ বিপর্যস্ত দক্ষিণ লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ওপর গুলিবর্ষণ বেনিনে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থান ঘোষণা, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট তালন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সিইসিসহ কমিশনারদের বৈঠক গাজায় স্থায়ী দখলদারিত্বের অবসানই অস্ত্র সমর্পণের শর্ত: হামাস
নোটিশ :
Eid Bazar ! Eid Bazar ! Held on 30th March Saturday @ Paterson Firemanhall, Adress 226 Walnut ST, Paterson, NJ 07522 /  9th International Women's Day Award Held on April 27, 2024 @ The Brownston, 251 West Broadway, Paterson, NJ .7522 Ticket 70 Dollar Per Person Get Tickets From www.eventbrite.com

ডাকসু নির্বাচন: উৎসবের মাঝেই জমে উঠেছে ভিপি-জিএস লড়াই

রিপোর্টার / ৮০ বার
আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন

Sakhawat Hossain

সাখাওয়াত হোসেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকেই সবগুলো কেন্দ্রেই ভোটারদের লম্বা লাইন দেখা গেছে। এবার ডাকসু ও হল সংসদের ভোটের বুথের ক্ষেত্রে আনা হয়েছে পরিবর্তন। আগে হলে বুথ থাকলেও এবার বুথ আনা হয়েছে হলের বাইরে। ফলে ভয়-ভীতি-চাপের প্রভাব মুক্ত থাকবে এবারের ভোটযাত্রা। প্রতিটি বুথে থাকবে সিসি ক্যামেরা, সেটাও ভোটকে সুষ্ঠু করতে সাহায্য করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

ডাকসুতে ভিপি-জিএস-এজিএসসহ সম্পাদক পদ মোট ১৫টি। সদস্য পদ আছে ১৩টি। সর্বমোট পদ ২৮টি। অর্থাৎ প্রত্যেক ভোটারকে কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ বা ডাকসুতে ভোট দিতে হবে ২৮ টি পদে। প্রতিটি ভোটার আবাসিক বা অনাবাসিক যাই হোন না কেন, তার হল সংসদে ভোট আছে। ভিপি-জিএস-এজিএসসহ হল সংসদে প্রত্যেক ভোটার সুযোগ পাবেন মোট ১৩টি পদে ভোট দেওয়ার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল আছে মেয়েদের পাঁচটি ছেলেদের ১৩টি। সর্বমোট আবাসিক হল সংখ্যা ১৮টি।

ডাকসু ও হল সংসদ মিলিয়ে একজন ভোটার সুযোগ পাবেন সর্বমোট ৪১টি ভোট দেওয়ার। ডাকসুতে মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। মেয়েদের ভোট ১৮ হাজার ৯০২, যা মোট ভোটের ৪৭.৫২ শতাংশ। অন্যদিকে ছেলেদের ভোট ২০ হাজার ৮৭৩, যা মোট ভোটের ৫২.৪৮শতাংশ।

ডাকসু নির্বাচনে ২৮টি পদে চূড়ান্তভাবে ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পদভিত্তিক প্রার্থী সংখ্যা হচ্ছে: সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস)পদে ১৯ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ১২ জন, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে ১৫ জন, সদস্য পদে ২১৭ জন। এবারের ডাকসু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা মোট ৪৭১ জন প্রার্থীর মধ্যে নারী ৬২ জন ও পুরুষ ৪০৯ জন।

 

আলোচিত পদের প্রার্থী যারা

ডাকসুতে ভিপি পদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের মো. আবিদুল ইসলাম খান, ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের (ইসলামী ছাত্রশিবির) সাদিক কায়েম, প্রতিরোধ পর্ষদের (ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী ও ছাত্রফ্রন্টের একাংশ) শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের (বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ) আব্দুল কাদের, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের উমামা ফাতেমা, ডাকসু ফর চেঞ্জ প্যানেলের (বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ) বিন ইয়ামিন মোল্লা, সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের (ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ) ইয়াসিন আরাফাত, সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদের (এনসিপি থেকে বহিষ্কৃত মাহিন সরকার) জালালুদ্দিন মুহাম্মদ খালিদ, অপরাজেয়৭১, অদম্য ২৪ প্যানেলের (ছাত্র ইউনিয়ন, বাসদ, বিসিএল) মো. নাইম হাসান মূলত আলোচিত প্রতিদ্বন্দ্বী। ভিপি পদে দুই নারী প্রার্থীই লড়াইয়ের মাঠে ভালোভাবে অবস্থান করছেন।

 

জিএস পদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের শেখ তানভীর বারী হামিম, ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের (ইসলামী ছাত্রশিবির) এস এম ফরহাদ, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের (বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ) আবু বাকের মজুমদার, প্রতিরোধ পর্ষদের (ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী ও ছাত্রফ্রন্টের একাংশ) মেঘ মল্লার বসু, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের আল সাদী ভূঁইয়া, ডাকসু ফর চেঞ্জ প্যানেলের (বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ) সাবিনা ইয়াসমীন, সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের (ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ) খায়রুল আহসান মারযান, অপরাজেয়৭১, অদম্য ২৪ প্যানেলের(ছাত্র ইউনিয়ন, বাসদ, বিসিএল) এনামুল হাসান অয়ন মূলত আলোচিত প্রতিদ্বন্দ্বী। এনসিপির বহিষ্কৃত নেতা মাহিন সরকার জিএস পদপ্রার্থী আবু বাকের মজুমদারকে সমর্থন জানিয়ে ভোট থেকে সরে দাঁড়ালেন বলে সর্বশেষ খবর পাওয়া গেছে। জিএস পদে ডাকসু ফর চেঞ্জ প্যানেলের (বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ) সাবিনা ইয়াসমীন দলীয় প্যানেলে আলোচিত নারীপ্রার্থী হিসাবে লড়াই করছেন।

 

ডাকসুর এজিএস পদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের তানভীর আল হাদী মায়েদ, ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের (ইসলামী ছাত্রশিবির) মহিউদ্দিন খান, প্রতিরোধ পর্ষদের (ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী ও ছাত্রফ্রন্টের একাংশ) জাবির আহমেদ জুবেল, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের (বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ) আশরেফা খাতুন, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের জাহিদ আহমেদ, ডাকসু ফর চেঞ্জ প্যানেলের (বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ) রাকিবুল ইসলাম, সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের (ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ) সাইফ মোহাম্মাদ আলাউদ্দিন, সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদের ফাতেহা শারমিন এ্যানি, অপরাজেয়৭১, অদম্য ২৪ প্যানেলের (ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রফ্রন্টের একাংশ এবং বাংলাদেশ জাসদের ছাত্র সংগঠন বিসিএল) অদিতি ইসলাম মূলত আলোচিত প্রতিদ্বন্দ্বী।

এজিএস পদে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের (বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ) আশরেফা খাতুন, সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের ফাতেহা শারমিন এ্যানি, অপরাজেয়৭১, অদম্য ২৪ প্যানেলের (ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রফ্রন্টের একাংশ এবং বাংলাদেশ জাসদের ছাত্র সংগঠন বিসিএল) অদিতি ইসলাম দলীয় প্যানেলে আলোচিত তিন নারী প্রর্থী হিসাবে লড়াই করছেন।

ভোটারদের যা প্রভাবিত করতে পারে

১. এবার ভোটের ফলাফলে যেসব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ তার একটি হচ্ছে প্যানেল ভোট বা রাজনৈতিক সংগঠনের সমর্থকদের ভোট। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের পর হলে হলে ছাত্ররাজনীতি সাধারণ ছাত্রদের অপছন্দের বিষয় হয়ে ওঠে। অনেকে বলেন এটা নিয়েও রাজনীতি চলতে থাকে। বিশেষ করে কোনো কোনো ছাত্রসংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের নামে তারা গুপ্ত সংগঠন চালানোর সুবিধে নিচ্ছে। ঘটনা যাই হোক না কেন, শিক্ষার্থীদের বড় অংশ প্রত্যক্ষ ছাত্ররাজনীতির বিগত দিনের স্মৃতি, বিশেষ করে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের একনায়কত্ব, গণরুম-গেস্টরুম কালচারকে প্রত্যাখান করতে থাকে।

এবারের ডাকসু নির্বাচনে সেটাই সম্ভবত বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গণরুম-গেস্টরুমের নিপীড়নের রাজনীতি থেকে বের করে আনতে চান। যারা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন, তারা সবাই সেই প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন। তারপরও শেষাবধি ডাকসু নির্বাচন নামে-বেনামে দেশের মূলরাজনীতির ছায়ারাজনীতি হিসাবে গঠিত রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলোর আদলেই ফিরে এসেছে।

২. ৪৮ শতাংশ নারী ভোটও এবারের ফলাফল নির্ধারণে খুবই গুরুত্ব বহন করছে। জগন্নাথ হলের সংখ্যালঘু ভোটারদের ২ হাজার ২২২ ভোটও তাৎপর্যপূর্ণ। জুলাই অভ্যুত্থানে প্রার্থীরা কে কি ভূমিকা রেখেছেন সেটাও থাকবে ভোটারদের মনে। থাকবে প্রার্থীর ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভোটার লক্ষ্য করছেন প্রার্থীদের কর্মকাণ্ড। এসব বিবেচনা এবার ভোটারদের সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবিত করবে।

৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের বড় অংশ যারা হলে থাকেন না, তারা ডাকসু এবং হল সংসদে প্রত্যেকটি পদে ভোট নাও দিতে পারেন। তারা বড় বড় পদে, তাদের পছন্দসই পদে বেছে বেছে ভোট দিতে পারেন। কেননা ৪১ টি পদের প্রার্থী বাছাই তাদের মনোযোগ কিংবা পরিচয়ের সীমার মধ্যে খুব সহজ কাজ নাও হতে পারে। ফলে, সবগুলো পদে ভোট দিতে সবাই আগ্রহী নাও হতে পারে।

৪. ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের অংশীজন সবাই আলাদা আলাদাভাবে অংশ নিচ্ছে। বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর ছাত্রসংগঠন যেমন অংশ নিচ্ছে তেমনই স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও অংশ নিচ্ছেন। ফলে ডানপন্থী, বামপন্থী, মধ্যপন্থী সকল ভোট বিভাজিত হয়ে ডাকসু ভোটকে এক নতুন মাত্রায় দাঁড় করিয়েছে।

৫. অনেকক্ষেত্রে একই দলের অনেকেই পছন্দসই পদ না পাওয়াতে আলাদা আলাদা ভাবে প্যানেল দিয়েছেন কিংবা স্বতন্ত্রভাবে দাঁড়িয়েছেন। রাজনৈতিক মতাদর্শে মিল থাকলেও আলাদা আলাদা প্যানেলে ভোট বিভাজিত হবার সুযোগ তৈরি হয়েছে। ফলে, রাজনৈতিক পক্ষগুলো যার রাজনৈতিক সংগঠনকে যত মজবুত করতে পেরেছে, তারা প্যানেল ভোট বেশি সংগ্রহ করতে সক্ষম হবেন বলে ধারণা করা যায়।

৬. আঞ্চলিকতা, রাজনৈতিক যোগসূত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠিত বিভাগ বা অনুষদ, সোশ্যাল মিডিয়া–প্রার্থীরা যে যে যোগসূত্রে ভোটারদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারবেন, সেটাও ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিকথন প্রার্থীদের অনেকের বিষয়ে ভোটারদের মনোভাবে নেতিবাচক ভাবনা তৈরি করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

৭. বড় বড় রাজনৈতিক দলের আর্থিক, সাংগঠনিক সামর্থ্য বেশি। নানারকম নতুন, ইনোভেটিভ পথ তৈরি করে ভোটারদের আকৃষ্ট করার প্রক্রিয়া তৈরি হলে সেটা বড় রাজনৈতিক দলগুলোর বড় পদের প্রার্থীদের বিশেষ সুবিধা দিতে পারে।

ভিপি পদে ৪টি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর

ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে ৪টি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর কাজ করবে, ভোটের হিসেব-নিকেশ পাল্টে দেবে। এখন যারা অনলাইনে ব্যাপক মাতামাতি করছেন, দিনশেষে তারা হতাশ হতে পারেন। নির্বাচনে খুবই বাজেভাবে হেরে যেতে পারেন। চারটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা যেতে পারে।

১. আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ ঘরানার ভোট

সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে নির্বাচিত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নুর। তিনি পেয়েছিলেন ১১,০৬২ ভোট। নুরকে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সাপোর্ট দিয়েছিল ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও অন্যান্য আওয়ামী লীগ বিরোধী অধিকাংশ দল। যার ফলে তিনিই সহজেই জয়ী হয়েছিলেন। অন্যদিকে দ্বিতীয় হয়েছিলেন ছাত্রলীগের ভিপি প্রার্থী রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। তিনি পান ৯,১২৯ ভোট। শতাংশের হিসেবে নুর ৪৫.১৫%, শোভন ৩৭.২৬% পেয়েছিলেন।

এখন অনেকে ভাবতে পারেন, এবার ছাত্রলীগের নিজস্ব প্রার্থী নেই। অবশ্য কথা মিথ্যা নয়। প্রা্থী নেই, তবে তাদের ভোটার তো আছে অনেক। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ ঘরানার এখনো অন্তত ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ ভোটার আছে, এটা বলা যায়। নিশ্চিতভাবেইই বলা যায়, কোনোভাবেই ছাত্রশিবিরের সাদিক কায়েমকে ভোট দেবেন না তারা। বাগছাসের আব্দুল কাদেরকেও ভোট দেবেন না। তবে কাকে ভোট দেবেন? আমার ধারনা, তারা ভিপি প্রার্থী ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খানকে ভোট দিতে পারেন, অথবা উমামা ফাতেমাকে ভোট দিতে পারেন। এছাড়াও শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি, নাইম হাসান হৃদয়কে অনেকে ভোট দিতে পারেন। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের পক্ষে বিএনপি যদি না থাকত, তাহলে ছাত্রদলের আবিদের শতভাগ জয়ের সম্ভাবনা থাকত। তারপরও ছাত্রশিবিরকে ঠেকাতে অনেকে আবিদকে ভোট দিতে পারেন।

২. নারী শিক্ষার্থীর ভোট

ডাকসু নির্বাচনে নারী শিক্ষার্থীর ভোট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ঢাবির অর্ধেক ভোটার নারী। আর অধিকাংশ নারী শিক্ষার্থী আত্মপ্রত্যয়ী; নারীর স্বাধীনতা, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্বাবলম্বীতার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস আছে তাদের। এটা অনুমান করা কঠিন নয়, নারী শিক্ষার্থীদের ভোট খুব একটা পাবে না ছাত্রশিবির। এ ক্ষেত্রে আবিদ, উমামার বাক্সে যেতে পারে নারী শিক্ষার্থীদের ভোট। তাদের ভোট বেশি যিনি পাবেন, তিনি ভিপি পদে জয়ী হতে পারেন।

৩. অনাবাসিক শিক্ষার্থীর ভোট

অনেক শিক্ষার্থী হলে থাকেন না, এটা সবাই জানেন। ঢাকা ও তার আশপাশে যাদের বাড়ি, তারা সাধারণত হলে থাকেন না। এছাড়াও অনেকে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় থাকেন, অনেকে মেসে থাকেন। অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা যদি ভোট দিতে আসেন, তবে তা একটা বড় ফ্যাক্টর হতে পারে। ঢাকায় যারা বেড়ে উঠেছেন, যাদের ফ্যামিলি একটু স্বচ্ছল, তাদের অনেকেই ছাত্রশিবিরকে পছন্দ করেন না। কারণ, ছাত্রশিবির যে আদর্শ ও বাধ্যবাধকতার রাজনীতি করেন, ঢাকার ছেলেমেয়েদের মধ্যে তার প্রতি খুব একটা আকর্ষণ নেই। এজন্য অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোট আবিদ, উমামা, ইমির বাক্সে যেতে পারে।

৪. হিন্দু আদিবাসী ভোট

হিন্দু ও আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ভোট ডাকসুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থীরা কাকে ভোট দেবেন, সেটা একটা ফ্যাক্টর হতে পারে। জগন্নাথ হলে ২ হাজারের বেশি ভোটার আছেন। আপনাকে লিখে দিতে পারি, ছাত্রশিবির কিংবা বাগছাস সেখান থেকে ২০টি ভোটও পাবেন না। তাদের ভোট একচেটিয়াভাবে যারা পাবেন, তারা ভিপি পদে জয়ী হতে পারেন।

এশিয়ানপোস্ট/আরজে


এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর