পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খানকে ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ আখ্যা দেয়ায় তা হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছে তার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই)।
গত শনিবার রাজধানী ইসলামাবাদের খাইবার পাখতুনখোয়া হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়, যেখানে দলের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গওহর আলী খান এবং সেক্রেটারি জেনারেল সালমান আকরাম রাজাসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সালমান আকরাম রাজা বলেন, “দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতাকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলা হাস্যকর। এটি নতুন ঘটনা নয়; অতীতে বারবার ইনস্টিটিউশন জনপ্রিয় নেতাদের হুমকি আখ্যা দিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য হলো নেতাদের দৃশ্যপট থেকে সরানো, তবে এটি কখনও সফল হয়নি। ৯০-এর দশকে বেনজির ভুট্টোর ওপর এমন কৌশল প্রয়োগ হয়েছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছিল। এবারও একই চেষ্টা ব্যর্থ হবে। জনগণের হৃদয় থেকে কাউকে সরানো সহজ নয়।”
তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তানিরা সচেতন জাতি। তারা যৌক্তিক কারণে ইমরান খানের পাশে রয়েছে এবং জানে আসল নিয়ন্ত্রণ কার হাতে।”
এদিকে, গত শুক্রবার পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খানের বিষয়ে বলেছেন, “তার বক্তব্য হলো, যদি আমি ক্ষমতায় না থাকি, কোনো কিছু থাকতে পারবে না। তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি এবং আত্মসর্বস্ব।” পাকিস্তান সরকার পাঞ্জাবের যে কারাগারে ইমরান খান বন্দি আছেন, সেখানে দর্শনার্থীদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে। সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ইমরান সচেতনভাবে তাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন এবং কারাগারে প্রাপ্ত সুবিধা ব্যবহার করছেন।
পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গওহর আলী খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা সেনাবাহিনীর দেখাদেখি কোনো পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করছি না। তবে জনগণের কাছে সত্যি তথ্য পৌঁছানো জরুরি। আমরা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়লে লাভবান হবে তৃতীয় পক্ষ। পিটিআই নেতাদের উপর দীর্ঘদিন ধরে দমন-পীড়ন চলেছে। গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা সব সহ্য করছি। তবে অবস্থা যদি অব্যাহত থাকে, গণতন্ত্র ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।”
পিটিআই-এর বক্তব্য, ইমরান খানের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী ও সরকারের পদক্ষেপ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এবং গণতন্ত্র ও জনপ্রিয় নেতাদের দমন করার প্রচেষ্টা।