আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর আবারও দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যদিও সীমান্ত এখন শান্ত রয়েছে, তবে দুই পক্ষের মধ্যে চলছে কথার লড়াই।
গত বৃহস্পতিবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পাক-আফগান প্রতিনিধিরা নতুন করে বৈঠকে বসেন। শুক্রবারও আলোচনা চললেও শনিবার জানা যায়, সেই বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে দুই দেশের সম্পর্ক আবারও টানাপোড়েনে পড়েছে।
এদিকে, পাকিস্তান যদি কোনো হামলা চালায় এবং যুদ্ধ বাঁধে তাহলে কঠোর পরিণতির মুখে পড়তে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আফগানিস্তানের উপজাতি ও সীমান্ত মন্ত্রী নুরুল্লাহ নুরি। তিনি বলেন, “আফগানদের ধৈর্য পরীক্ষা করবেন না। যদি যুদ্ধ বাঁধে, আফগানিস্তানের বৃদ্ধ থেকে শুরু করে যুবক—সবাই লড়াইয়ে নামবে।”
এর আগে আফগান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, আলোচনায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ‘গুরুত্বের অভাব’ ছিল। তিনি অভিযোগ করে বলেন, পাকিস্তান তার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায় আফগানিস্তানের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ আরও বলেন, “আল্লাহ ও সাধারণ মানুষের সহায়তায় আফগানিস্তান তার ভৌগলিক অখণ্ডতা অক্ষুন্ন রাখবে। আমরা আমাদের সীমান্ত রক্ষা করব, কেউ যেন মনে না করে যে আফগানরা দুর্বল।”
তালেবান সরকার জানিয়েছে, সর্বশেষ আলোচনা ব্যর্থ হলেও আপাতত যুদ্ধবিরতি বহাল থাকবে। তবে তারা পাকিস্তানের ‘অসহযোগিতা ও দায়িত্বহীনতাকে’ আলোচনার ব্যর্থতার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
গত ১৯ অক্টোবর কাতারের রাজধানী দোহায় দুই দেশের সরকারের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। ওই বৈঠকেই তারা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। কিন্তু এরপর থেকে সীমান্তে মাঝে মাঝেই উত্তেজনা দেখা দিচ্ছে।
আলোচনায় ব্যর্থতার কারণ ব্যাখ্যা করে জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, “পাকিস্তানি প্রতিনিধিরা আলোচনার সময় তাদের নিরাপত্তা সমস্যা পুরোপুরি আফগানিস্তানের কাঁধে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। অথচ তারা নিজেদের বা আফগানিস্তানের নিরাপত্তার জন্য কোনো দায়িত্ব নিতে চায়নি।”
তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তানি পক্ষের অসহযোগিতামূলক এবং দায়িত্বহীন আচরণের কারণেই আলোচনায় কোনো ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায়নি।”
বর্তমানে সীমান্তে কোনো বড় ধরনের সংঘর্ষ না থাকলেও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। কাবুল ও ইসলামাবাদ—দু’পক্ষই একে অপরকে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন করে সামরিক উত্তেজনা তৈরি হলে গোটা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়তে পারে।