আন্তর্জাতিক ডেস্ক
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভারতে দুদিনের রাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। তার আগেই রাশিয়ার পার্লামেন্ট ভারতের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে। এই চুক্তি দুই দেশের সামরিক বাহিনীকে একে অপরের দেশে গিয়ে লজিস্টিক্যাল সাপোর্ট ব্যবহারের অনুমতি দেয়। অর্থাৎ, এক দেশের বাহিনী অপর দেশের সামরিক পরিকাঠামো ব্যবহার করতে পারবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আহ্বানে পুতিন ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে সামরিক, বাণিজ্য ও খনিজ তেলের বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে রাশিয়া কতটা সাহায্য করবে তা নির্ভর করছে ভারতের আগ্রহের ওপর। এটি নির্দেশ করে যে চুক্তির কার্যকারিতা দুই দেশের সমন্বয়ের ওপর নির্ভর করবে।
চুক্তির নাম ‘রেলোস’ বা Reciprocal Exchange of Logistic Support। এটি গত ১৮ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তবে রাশিয়ার নিম্নকক্ষ ‘স্টেট ড্যুমা’ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দিয়েছে। সম্প্রতি চুক্তিটি ড্যুমার কাছে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করেছিলেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন।
রাশিয়ার পার্লামেন্টে অনুমোদনের আগে ড্যুমার স্পিকার ভ্যাচেস্লাভ ভোলোদিন সভার শুরুতে ভাষণে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘সার্বিক এবং কৌশলগত’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, রাশিয়া ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়।
দুই দেশের সামরিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের পাশাপাশি এই চুক্তি বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে। সামরিক পরিকাঠামো, প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম এবং লজিস্টিক্যাল সমন্বয়ের মাধ্যমে দুই দেশ একে অপরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ফলে এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানও প্রভাবিত হবে। ভারত ও রাশিয়া দুই দেশই আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নতুন সমন্বয় প্রতিষ্ঠার সুযোগ পাচ্ছে।
চুক্তি অনুমোদনের সঙ্গে সঙ্গে পুতিনের সফর দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সামরিক সহযোগিতার পাশাপাশি বাণিজ্য ও শক্তি খাতে চুক্তি আলোচনাও হতে পারে। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও মজবুত হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
ভারত-রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সামরিক, অর্থনৈতিক ও কৌশলগত ক্ষেত্রের সমন্বয়ে ভবিষ্যতে আরও দৃঢ় হবে। এই চুক্তি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে যা দুই দেশের জন্য লাভজনক ও নিরাপত্তামূলক প্রভাব ফেলবে।