অনলাইন রিপোর্টারঃ
দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, সংকটকালে মায়ের স্নেহস্পর্শ পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তাঁরও রয়েছে, কিন্তু দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত এখন তাঁর একক নিয়ন্ত্রণে নেই। আজ শনিবার বাংলাদেশ সময় সকাল পৌনে নয়টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা জানান।
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসক এবং দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। দলীয় প্রধানের গুরুতর অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশ–বিদেশের নেতা–কর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
একই সঙ্গে অনেকেই মনে করছেন, মায়ের অবস্থা বিবেচনায় তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফিরতে পারেন। এ অবস্থায় আজ সকালে দেওয়া ফেসবুক পোস্টে তারেক রহমান অসুস্থ মায়ের জন্য দোয়া অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান এবং দলমত–নির্বিশেষে যাঁরা খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাঁর পোস্টে বলা হয়, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ ও সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যায় আছেন।
]তাঁর রোগমুক্তির জন্য দেশের সর্বস্তরের জনগণ আন্তরিকভাবে দোয়া করছেন। তিনি উল্লেখ করেন, প্রধান উপদেষ্টা তাঁর রোগমুক্তির জন্য দোয়ার পাশাপাশি সর্বতো সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তারেক রহমান আরও জানান, চিকিৎসক দল বরাবরের মতো তাঁদের পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতা দিয়ে চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, বন্ধুপ্রতীম কয়েকটি রাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও উন্নত চিকিৎসাসহ সম্ভাব্য সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার প্রতি সবার ভালোবাসা ও উদ্বেগের জন্য পরিবারবর্গের পক্ষ থেকে তিনি ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তাঁর মায়ের সুস্থতার জন্য দোয়া অব্যাহত রাখার অনুরোধ করেন।
ফেসবুক পোস্টে তারেক রহমান লিখেন, ‘এমন সংকটকালে মায়ের স্নেহস্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যেমন অন্য সন্তানের থাকে, আমারও রয়েছে। তবে বাস্তবতার কারণে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত এখন আমার একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগও সীমিত।’ তিনি বলেন, রাজনৈতিক বাস্তবতা অনুকূল হলে তাঁর দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে এবং তিনি স্বদেশে ফিরে আসতে পারবেন বলে পরিবার আশাবাদী। তারেক রহমানের এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন অবস্থায় পৌঁছানোয় দলের ভেতরে–বাইরে তাঁর দেশে ফেরা নিয়ে জল্পনা–কল্পনা চলছিল। তবে নিজের পোস্টে তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি তাঁর নিজের হাতে নেই এবং এ বিষয়ে রাজনৈতিক ও আইনগত বাস্তবতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এদিকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা খালেদা জিয়ার চিকিৎসার উন্নতি ও দেশান্তরে নেওয়ার দাবি অব্যাহত রেখেছেন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর বিভিন্ন জটিলতা আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণ ছাড়া তাঁকে সরানো ঝুঁকিপূর্ণ। বিএনপির শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, চিকিৎসা–সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্ত চিকিৎসকদের মতামত অনুযায়ী নেওয়া হবে। সবশেষে তারেক রহমান তাঁর পোস্টে দেশবাসীর প্রতি আবারও অনুরোধ জানান, খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দ্রুত আরোগ্যের জন্য দোয়া অব্যাহত রাখার। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূলে এলে শিগগিরই তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন সম্ভব হবে।