আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর নিউইয়র্কে ইতিহাস গড়েছেন জোহরান মামদানি। দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এই মুসলিম রাজনীতিক শহরটির প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তার এই জয়কে শুধু ধর্মীয় বা বর্ণগত পরিচয়ের জয় নয়, বরং জনজীবনের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু যেমন জীবনযাত্রার ব্যয় কমানো ও নাগরিক অধিকারের উন্নয়নের প্রতি মনোযোগী নেতৃত্বের জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
৫ নভেম্বর সকালে নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে জোহরান মামদানির বিজয় নিশ্চিত হয়। ৮৪ লাখেরও বেশি জনসংখ্যার এ মহানগরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এবং আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া এক রাজনীতিক মেয়র নির্বাচিত হলেন। তিনি নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন এবং প্রগতিশীল রাজনীতির প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিত।
মঙ্গলবার রাতে ব্রুকলিনের প্যারামাউন্ট থিয়েটারে আয়োজিত বিজয় উৎসবে তিনি বলেন, “আপনাদের কারণে আজ এই শহরে ইতিহাস সৃষ্টি হলো।” বহুজাতিক ও বহুধর্মীয় নিউইয়র্কে তার জয়কে অগ্রগতির প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মামদানির জয় যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে নতুন প্রজন্মের প্রগতিশীল ও সমাজতান্ত্রিক নেতৃত্বের উত্থানের নির্দেশক। সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমোর তুলনায় তিনি ‘পুরোনো ধারার’ নেতাদের থেকে আলাদা নতুন ভিশন নিয়ে আসছেন।
বিভিন্ন বয়সী ভোটাররা তার প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন। ব্রঙ্কসের সমাজকর্মী জোশুয়া উইলসন বলেন, “আমেরিকা এখন রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত, তাই নতুন ও তরুণ কণ্ঠের উত্থান জরুরি।” অন্যদিকে, ব্রুকলিনের ফ্রিল্যান্সার মেগান মার্কস মনে করেন, “তার মতো প্রগতিশীল নেতৃত্ব দেশের জন্য প্রয়োজন।”
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ড্রাইভার ইফতেখার খান বলেন, “মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় ভোটারদের ঐক্যই মামদানির বড় শক্তি। ৯/১১ পর বৈষম্যের মুখোমুখি মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য এটি একটি নতুন সূচনা।”
ম্যাজিকের মধ্যে ট্রাম্পের রক্ষণশীল ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণে কুয়োমোকে সমর্থন দেওয়া সত্ত্বেও, মামদানির জয় প্রমাণ করে নিউইয়র্কবাসী নতুন ধারার প্রগতিশীল নেতৃত্বের প্রতি আকৃষ্ট।