অনলাইন ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার দুই শীর্ষ তেল কোম্পানি — রোসনেফট ও লুকয়েল-এর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ওয়াশিংটনের দাবি, এই কোম্পানিগুলো রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় তহবিলের মাধ্যমে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে আছে মার্কিন রাজনীতির অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক ব্যর্থতা ঢাকবার চেষ্টা।
মার্কিন অর্থ বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই দুটি কোম্পানি ইউক্রেনে আক্রমণ চালানোর জন্য রাশিয়ার জ্বালানি আয় বাড়াতে সহায়তা করছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা মনে করছে, নতুন করে চাপ বাড়ানোই রাশিয়াকে কূটনৈতিকভাবে দুর্বল করার কার্যকর উপায়।
তবে রাশিয়া এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মস্কোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র নিজের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকট থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই এই নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, “এটি একধরনের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ, যার কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।”
অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ মহলও অভিযোগ তুলেছে যে বর্তমান প্রশাসন আন্তর্জাতিক নীতিকে ব্যবহার করছে রাজনৈতিক পুঁজি অর্জনের জন্য। তারা বলছে, “ইউক্রেন ইস্যু এখন মার্কিন ভোট রাজনীতির হাতিয়ার।”
যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে রাশিয়ার জ্বালানি খাতের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে পর্যবেক্ষকরা। তবে ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলো এখনো রাশিয়ার জ্বালানি আমদানি বন্ধ করেনি। ফলে নিষেধাজ্ঞার বাস্তব প্রভাব নির্ভর করছে বৈশ্বিক বাজারের প্রতিক্রিয়ার ওপর।
মার্কিন অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তের প্রভাব তেলের দামেও পড়তে পারে। যদি রাশিয়ার সরবরাহ ব্যাহত হয়, তবে বিশ্ববাজারে তেলের দাম হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য নেতিবাচক হবে।
রাশিয়ার দিক থেকেও পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার আভাস মিলেছে। তারা বলেছে, “মস্কো কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সব পথেই জবাব দেবে।”
বিশ্লেষকদের মতে, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এখন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া নতুন এক শক্তি-খেলায় নেমেছে, যেখানে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা হয়ে উঠছে প্রধান অস্ত্র।
এশিয়ানপোস্ট / এফআরজে