সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন
নোটিশ :
Eid Bazar ! Eid Bazar ! Held on 30th March Saturday @ Paterson Firemanhall, Adress 226 Walnut ST, Paterson, NJ 07522 /  9th International Women's Day Award Held on April 27, 2024 @ The Brownston, 251 West Broadway, Paterson, NJ .7522 Ticket 70 Dollar Per Person Get Tickets From www.eventbrite.com

আইসিইউতে শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহে

রাজু / ৪৭ বার
আপডেটের সময় : সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

রাষ্ট্রীয় অর্থ অপব্যবহারের অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেকে কারাগারে নেওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গ্রেপ্তারের পরের দিন শনিবার দেশটির সরকারি এক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে তাকে। এর আগে, শুক্রবার কলম্বোর অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) দেশটির সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপব্যবহারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে। কলম্বো ন্যাশনাল হাসপাতালের উপ-মহাপরিচালক রুকশান বেল্লানা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, শুক্রবার রাতে রনিল বিক্রমাসিংহেকে রিমান্ডে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি তীব্র পানিশূন্যতায় ভুগছিলেন এবং তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার প্রয়োজন হয়।

তিনি বলেন, গুরুতর জটিলতা ঠেকাতে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও তীব্র পানিশূন্যতার চিকিৎসা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। হাসপাতালে আনার সময় তিনি গুরুতর ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। তবে বর্তমানে বিক্রমাসিংহের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন বেল্লানা।

কলম্বোর কারা কর্তৃপক্ষ বলেছে, শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেকে শ্রীলঙ্কার প্রধান সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।কারাগারের চিকিৎসা কেন্দ্রে তাকে এ ধরনের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়। এর আগে, শনিবার সকালের দিকে ৭৬ বছর বয়সী বিক্রমাসিংহেকে কারাগারে দেখতে যাওয়া দেশটির বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা বলেন, কারাগারে সাক্ষাতের সময় সাবেক প্রেসিডেন্টের মনোবল দৃঢ় ছিল। দেশটির বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করে বলেছে, আবারও ক্ষমতায় ফিরতে পারেন আশঙ্কায় সরকার রনিল বিক্রমাসিংহেকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।

গত বছরের সেপ্টেম্বরের শ্রীলঙ্কার জাতীয় নির্বাচনে দেশটির বামপন্থি রাজনীতিক অনুরা কুমারা দিসানায়েকের কাছে হেরে যান বিক্রমাসিংহে। এই পরাজয়ের পর নির্বাচিত কোনও পদে না থাকলেও রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। শুক্রবার দেশটির পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে সাবেক ওই প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তার করে। দ্বীপ রাষ্ট্রটির ব্যাপক দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার নিয়ে দিসানায়েকে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দুর্নীতি দমনকারী বিভিন্ন ইউনিট তদন্ত জোরদার করেছে। ২০২২ সালের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট থেকে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশটি।

শ্রীলঙ্কার প্রধান বিরোধী দল সমাজি জনা বালাওয়েগায়ার (এসজেবি) সংসদ সদস্য নালিন বান্দারা কলম্বোর নিউ ম্যাগাজিন কারাগারে বিক্রমাসিংহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, দেশের ক্ষমতাসীন দিসানায়েকে নেতৃত্বাধীন বামপন্থি সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে।

বান্দারা বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্টের বক্তব্য হলো, নতুন সরকারের দমননীতির বিরুদ্ধে আমাদের এক মঞ্চে আসা উচিত। শ্রীলঙ্কার ২২৫ আসনের সংসদে বিক্রমাসিংহের রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) মাত্র দুটি আসন আছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের পর দলটি বলেছে, সরকার তাকে ভয় পাচ্ছে।

ইউএনপির মহাসচিব থালাথা আতুকোরালা কলম্বোতে সাংবাদিকদের বলেছেন, রনিল বিক্রমাসিংহে আবারও ক্ষমতায় ফিরতে পারেন বলে সরকার ভয় পাচ্ছে। এই কারণেই তাকে গ্রেপ্তার করেছে সরকার।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে বিক্রমাসিংহে রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যবহার করে ব্যক্তিগত সফরে যুক্তরাজ্যে যান বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। কিউবার রাজধানী হাভানায় অনুষ্ঠিত জি-৭৭ সম্মেলন ও নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ থেকে ফেরার পথে লন্ডনে তিনি ব্যক্তিগত সফর করেছিলেন অভিযোগ করা হয়েছে।

আদালতে এই অপরাধ প্রমাণিত হলে বিক্রমাসিংহের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ড ও আত্মসাৎকৃত অর্থের তিনগুণ পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। অভিযোগে বলা হয়েছে, স্ত্রী মৈত্রিকে উলভারহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক অধ্যাপনার খেতাব প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার উদ্দেশে তিনি দুই দিনের যুক্তরাজ্য সফর করেছিলেন।

তবে বিক্রমাসিংহে বরাবরই দাবি করেছেন, তার স্ত্রীর ভ্রমণ ব্যয় তিনি নিজেই বহন করেছেন এবং কোনও রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয় করা হয়নি। তবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ অভিযোগ করেছে, বিক্রমাসিংহে ভ্রমণের জন্য ১ কোটি ৬৬ লাখ রুপি (৫৫ হাজার ডলার) সরকারি অর্থ ব্যবহার করেছেন।

২০২২ সালের জুলাইয়ে অর্থনৈতিক সংকটের জেরে শুরু হওয়া মাসব্যাপী বিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন গোটাবায়া রাজাপাকসে। পরে সেই সময় দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন বিক্রমাসিংহে।

২০২৩ সালের শুরুর দিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নিশ্চিত করে বিক্রমাসিংহে নেতৃত্বাধীন সরকার। সেই সময় কর হার দ্বিগুণ ও জ্বালানি ভর্তুকি প্রত্যাহার করে দেশটির অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেন তিনি।

অনুরা কুমারা দিসানায়েকের নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতির দায়ে দেশটির সাবেক দুই মন্ত্রীকে সর্বোচ্চ ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসের পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধেও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দেশটির আদালতে বিচার চলমান আছে। রাজাপাকসের পরিবারের অনেকে জামিনে মুক্ত আছেন।

দিসানায়েকের সরকার চলতি মাসে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দেশটির পুলিশ প্রধানকে অভিশংসিত করেছে। একই সঙ্গে কারা প্রধানকেও দুর্নীতির অভিযোগে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সূত্র: এএফপি।

এশিয়ানপোস্ট/আরজে

 


এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর