আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
যুক্তরাষ্ট্রে অত্যন্ত দক্ষ কর্মীদের জন্য এইচ-১বি ভিসা আবেদনকারীদের ওপর বাড়তি যাচাই বাছাই শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ নথি অনুযায়ী, যদি কোনও আবেদনকারী “ফ্রি স্পিচ নিয়ে সেন্সরশিপে” বা বাকস্বাধীনতা দমনের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাহলে তার ভিসা আবেদন বাতিল করার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করা যেতে পারে।
ডিসেম্বরের ২ তারিখে সব মার্কিন মিশনে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, এইচ-১বি আবেদনকারীদের জীবনবৃত্তান্ত এবং তাদের পরিবারসহ ভ্রমণকারীদের প্রোফাইল পরীক্ষা করতে হবে। তারা ভুল তথ্য প্রচার, বিভ্রান্তিকর তথ্য, কনটেন্ট মডারেশন, ফ্যাক্ট-চেকিং, কমপ্লায়েন্স বা অনলাইন নিরাপত্তার কাজে যুক্ত ছিলেন কি না তা যাচাই করা হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রে সংরক্ষিত মতপ্রকাশকে সেন্সর বা দমন করার প্রচেষ্টায় যুক্ত ছিলেন, তাহলে আইএনএ-এর নির্দিষ্ট ধারার অধীনে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা উচিত।
এই নতুন নীতি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ এই প্রতিষ্ঠানগুলো অত্যন্ত দক্ষ পেশাজীবীদের নিয়োগের জন্য এইচ-১বি ভিসার ওপর নির্ভর করে। অনেক ভারতীয় ও চীনা নাগরিক এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। তবে সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এসব কোম্পানির প্রধানরা ট্রাম্পকে সমর্থন করেছিলেন।
পূর্বে এইচ-১বি ভিসার জন্য কখনও এত বিস্তারিত যাচাই বা বাকস্বাধীনতার ওপর এমন বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার তথ্য প্রকাশিত হয়নি। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য দেয়নি।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই বাড়তি যাচাই নতুন ও পুরোনো দুই ধরনের আবেদনকারীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বিশেষত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও আর্থিক প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত আবেদনকারীদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সেখানে “সংরক্ষিত মতপ্রকাশ দমন” সম্পর্কিত অভিযোগ বেশি আসে।
ট্রাম্প প্রশাসন অনলাইনে মুক্ত মতপ্রকাশকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ডানপন্থী রাজনীতিবিদদের বক্তব্য দমন করা হলে ওয়াশিংটন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অভিবাসন-বিরোধী মতামতকে “ভুয়া তথ্য প্রতিরোধ” উদ্যোগের অংশ হিসেবে দমন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আগে হুমকি দিয়েছিলেন, যারা যুক্তরাষ্ট্রে মতপ্রকাশ দমন করছেন তাদের ভিসা নিষিদ্ধ করা হতে পারে। নির্দেশনাটি বিদেশি নীতিনির্ধারকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
ট্রাম্প প্রশাসন শিক্ষার্থী ভিসার ক্ষেত্রেও কঠোর নীতি চালু করেছে। কনস্যুলার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট আছে কি না তা পরীক্ষা করতে। সেপ্টেম্বরে এইচ-১বি ভিসার ওপর নতুন ফি আরোপ করা হয়েছে।
ট্রাম্প ও তার রিপাবলিকান মিত্ররা অভিযোগ করেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মতপ্রকাশ দমনকে উৎসাহিত করেছে, বিশেষত করোনার টিকা ও নির্বাচনের ভুল তথ্য মোকাবিলায়।