অনলাইন ডেস্কঃ
ঋণের চাপ মোকাবিলায় পাকিস্তান সরকার তাদের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব এয়ারলাইনস পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস (পিআইএ) বিক্রির জন্য নিলামে তুলছে। আগামী ২৩ ডিসেম্বর এ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে এবং পুরো প্রক্রিয়াটি পাকিস্তানের সব গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
পিআইএ’র শেয়ার ৫১ থেকে ১০০ শতাংশ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৭ বিলিয়ন অর্থাৎ ৭০০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তির শর্ত হিসেবে নেওয়া হয়েছে। চলতি বছর এটি পাকিস্তানের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে নিলামে চারটি বেসরকারি কোম্পানিকে যোগ্য হিসেবে বাছাই করা হয়েছে। সেগুলো হলো- লাকি সিমেন্ট কনসোর্টিয়াম, আরিফ হাবিব করপোরেশন কনসোর্টিয়াম, ফৌজি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড ও এয়ার ব্লু লিমিটেড।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ জানিয়েছেন, দেশের পতাকাবাহী বিমান সংস্থার হারানো সম্মান ফিরিয়ে আনতে এবং আধুনিক মানে রূপান্তর করতে এই প্রক্রিয়া বাধাহীন এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, খুব শিগগিরই পিআইএ তাদের ‘গ্রেট পিপল টু ফ্লাই উইথ’ স্লোগানের ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করবে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন, এই বেসরকারিকরণে স্বচ্ছতা ও যোগ্যতাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
যদিও গত সেপ্টেম্বর মাসে একটি সংসদীয় কমিটি জানিয়েছিল, নভেম্বরের মধ্যেই পিআইএ বেসরকারিকরণ হতে পারে, কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হয়নি। সম্প্রতি নিলাম প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার জন্য জাতীয় পরিষদের বেসরকারিকরণ সংক্রান্ত কমিটি স্পষ্ট সময়সীমা চেয়েছিল।
পিআইএ একসময় বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় এয়ারলাইন ছিল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইউরোপে ফ্লাইট পুনরায় চালু করেছে। এর আগে নিরাপত্তাজনিত কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন চার বছর ধরে এয়ারলাইনটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
এর আগে রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ব্লু ওয়ার্ল্ড সিটির দেওয়া ৩৬ মিলিয়ন ডলারের বিড ন্যূনতম মূল্যসীমা ৩০৫ মিলিয়ন ডলারের তুলনায় অনেক নিচে থাকার কারণে পিআইএ বিক্রির চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। সেই সময় কোম্পানির ঋণ, কর্মীসংখ্যা ও সীমিত নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাও উদ্বেগের কারণ ছিল।
এবারের নিলামে পাকিস্তানের সরকার আশা করছে, যোগ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো অংশগ্রহণ করবে এবং পিআইএকে লাভজনক এবং আধুনিক মানের এয়ারলাইনস হিসেবে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
পিআইএ’র বেসরকারিকরণ পাকিস্তানের অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক ঋণ বোঝা কমানোর গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এ ধরনের উদ্যোগকে সফলভাবে সম্পন্ন করা গুরুত্বপূর্ণ।