বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১২ পূর্বাহ্ন
নোটিশ :
Eid Bazar ! Eid Bazar ! Held on 30th March Saturday @ Paterson Firemanhall, Adress 226 Walnut ST, Paterson, NJ 07522 /  9th International Women's Day Award Held on April 27, 2024 @ The Brownston, 251 West Broadway, Paterson, NJ .7522 Ticket 70 Dollar Per Person Get Tickets From www.eventbrite.com

এক নজরে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী

রিপোর্টার / ৩০ বার
আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১২ পূর্বাহ্ন

অনলাইন রিপোর্টারঃ

খালেদা জিয়া ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট ভারতের জলপাইগুড়ি জন্মগ্রহণ করেন। তার গ্রামের বাড়ি ফেনী জেলার ফুলগাজীতে। পিতা ব্যবসায়ী ইস্কান্দার মজুমদার ও মা তৈয়বা মজুমদার দিনাজপুরের চন্দবাড়ির মেয়ে। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়। খালেদা জিয়ার শৈশব ও কৈশোর পার করেছেন দিনাজপুরের মুদিপাড়া গ্রামে। ১৯৬০ সালে দিনাজপুর সরকারি স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশনে উত্তীর্ণ হন খালেদা খানম পুতুল।

পরে তিনি দিনাজপুর সুরেন্দ্রনাথ কলেজে লেখাপড়া করেন । কলেজে পড়ার সময় তখনকার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ১৯৬৫ সালে স্বামীর সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানে যান। ১৯৬৯ সালের মার্চ পর্যন্ত করাচিতে ছিলেন। এর পর ঢাকায় আসেন। কিছু দিন জয়দেবপুর থাকার পর জিয়াউর রহমানের পোস্টিং হলে চট্টগ্রামের ষোলশহর এলাকায় চলে যান। জিয়াউর রহমান-খালেদা জিয়া দম্পতির দুই সন্তান তারেক রহমান পিনু আর প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকো।

মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তিনি কিছু দিন আত্মগোপনে ছিলেন। পরে ১৬ মে নৌপথে ঢাকায় চলে আসেন। বড়বোন খুরশিদ জাহানের বাসায় ১৭ জুন পর্যন্ত ছিলেন। ২ জুলাই সিদ্ধেশ্বরীতে এস আব্দুল্লাহর বাসা থেকে পাকসেনারা তাকে ও তার দুই ছেলেকে বন্দি করে। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে বন্দি ছিলেন। ছোট ছেলে কোকো ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। ১৯৮১ সালের ৩০ মে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে কিছু বিপথগামী সেনাসদস্যের হাতে নিহত হন। স্বামী নিহত হওয়ার আগপর্যন্ত গৃহবধূই ছিলেন খালেদা জিয়া।

দুই ছেলেকে লালন-পালন ও ঘরের কাজ নিয়েই সময় কাটাতেন। জিয়াউর রহমান দেশের প্রেসিডেন্ট হলেও রাজনীতিতে তার উপস্থিতি ছিল না। পরে দলের নেতাকর্মীদের আহ্বানে বিএনপির হাল ধরেন তিনি। বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে একসময় তাকে রাজনীতিতে নামতে হয়েছে। নীতি ও আদর্শে অটুট থাকায় তিনি আপসহীন নেত্রী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। খালেদা জিয়া তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন হিসেবে তিনি একটানা ৩২ বছর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮২ সালের ২ জানুয়ারি খালেদা জিয়া বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হিসেবে যোগ দেন। বছরখানেক যেতে না যেতেই নিজের রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় প্রশংসা অর্জন করেন। পরের বছর মার্চে তিনি দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদোন্নতি পান।

এক মাস পর ১ এপ্রিল তিনি দলের বর্ধিতসভায় প্রথম বক্তৃতা করেন। বিচারপতি আব্দুস সাত্তার অসুস্থ হলে তিনি ১৯৮৪ সালের ১২ জানুয়ারি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন এবং একই বছরের ১০ মে চেয়ারপারসন পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালে ১ সেপ্টেম্বর দলের চতুর্থ কাউন্সিলে দ্বিতীয়বার, ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে তৃতীয়বার এবং ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ দলের দশম কাউন্সিলে চতুর্থবারের মতো বিএনপির চেয়ারপারসন হন। বিএনপির দায়িত্ব নেয়ার পরই নানা প্রতিকূলতার মুখে পড়েন খালেদা জিয়া। দল ঐক্যবদ্ধ রেখে এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন।

এরশাদের শাসনের বিরুদ্ধে কোনো রকম সমঝোতা না করেই আপসহীন আন্দোলন করে গেছেন। ফলে এরশাদের পতন ত্বরান্বিত হয়েছে। ১৯৮৩ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সাত-দলীয় ঐক্যজোট গঠিত হয়। একই বছর সেপ্টেম্বরে জোটের মাধ্যমে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ দফায় আন্দোলন চলতে থাকে। ওই বছর ২১ মার্চ রাতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরশাদের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তাতেও এরশাদবিরোধী আন্দোলনে দমে যাননি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৫ দল ভেঙে আট দল ও পাঁচ দল হয়ে যায়। ৮ দল নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সাত ও পাঁচ দল নতুন করে আন্দোলন শুরু করে।

১৯৮৭ সাল থেকে খালেদা জিয়া ‘এরশাদ হটাও’ এক দফার আন্দোলন শুরু করেন। একটানা নিরলস ও আপসহীন সংগ্রামের পর ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় বিএনপি। খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থনে প্রথমবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হন। এর পর ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয়বার ও ২০০১ সালে জোটগতভাবে নির্বাচন করে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। খালেদা জিয়া দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) দুবার চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করেন। নির্বাচনের ইতিহাসে খালেদা জিয়ার একটি অনন্য রেকর্ড হচ্ছে- পাঁচটি সংসদ নির্বাচনে ২৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সব কটিতেই তিনিই জয়ী হয়েছেন।

সেনাসমর্থিত ওয়ান ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়াকে ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয়। দীর্ঘদিন কারাবাসের পর তিনি আইনি লড়াই করে সব কটি মামলায় জামিন নিয়ে মুক্তিপান। কারাগারে থাকাকালে তাকে বিদেশে নির্বাসনে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি যেতে অস্বীকার করেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ২০১০ সালের ১৩ নভেম্বর তিনি ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হন। খালেদা জিয়ার অভিযোগ, বলপ্রয়োগে তাকে বাসা থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।

তিনি ওই বাড়িটিতে ২৮ বছর ছিলেন। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তার সেনানিবাসের বাড়িটি তার নামে বরাদ্দ দিয়েছিলেন। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হয়ে পরের বছর ১১ সেপ্টেম্বর তিনি হাইকোর্টের আদেশে মুক্তিপান।


এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর