আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
দীর্ঘ পরিকল্পনা ও আলোচনার পর উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) আগামী বছর চালু করতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত একক পর্যটন ভিসা। এই ভিসার মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত ও ওমান—জিসিসিভুক্ত ছয় দেশ এক ভিসায় ভ্রমণ করা যাবে।
সৌদি আরবের পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খাতিব জানিয়েছেন, চার বছর ধরে যৌথভাবে কাজ করার পর এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে। তিনি বলেন, “এটি উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে ভ্রমণ ও পর্যটন খাতকে সংযুক্ত করার এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।”
বাহরাইনের রাজধানী মানামায় গালফ গেটওয়ে ইনভেস্টমেন্ট ফোরামে দেওয়া বক্তব্যে সৌদি মন্ত্রী বলেন, উপসাগরীয় অঞ্চল এখন পর্যটন খাতে এক বড় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। “তেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে পর্যটনকে নতুন অর্থনৈতিক স্তম্ভে পরিণত করার পথে এগোচ্ছে জিসিসি।”
২০২৩ সালের নভেম্বরে ওমানে অনুষ্ঠিত জিসিসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এই একক ভিসা প্রকল্প অনুমোদিত হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শেনজেন ভিসা মডেল অনুসরণে তৈরি এই ভিসার নাম রাখা হয়েছে ‘জিসিসি গ্র্যান্ড ট্যুরস ভিসা’।
এই ভিসায় আবেদনকারীরা একবার আবেদন করেই ছয় দেশেই ভ্রমণ করতে পারবেন। ভ্রমণের মেয়াদ এক থেকে তিন মাস পর্যন্ত হতে পারে এবং এতে খরচও পৃথক ভিসার তুলনায় কম হবে। প্রাথমিকভাবে এটি পর্যটন ও পারিবারিক ভ্রমণের জন্য প্রযোজ্য হবে এবং আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইনে সম্পন্ন করা যাবে।
আবেদনকারীদের পাসপোর্টের মেয়াদ থাকতে হবে অন্তত ছয় মাস। আবাসনের তথ্য, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, ভ্রমণ বিমা, আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ এবং ফেরার টিকিটও জমা দিতে হবে। অনুমোদনের পর ই-মেইলে ডিজিটাল ভিসা পাওয়া যাবে।
আল-খাতিব বলেন, “উপসাগরীয় অঞ্চলের বিমান যোগাযোগ ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে। গত বছর অঞ্চলটির চারটি বৃহৎ এয়ারলাইনস প্রায় ১৫ কোটি যাত্রী পরিবহন করেছে, যার মধ্যে ৭ কোটি যাত্রী ছিল উপসাগরীয় দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে—উপসাগরীয় অঞ্চলের ভেতরে ভ্রমণের আরও বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। একক ভিসা চালু হলে শুধু পর্যটন নয়, ব্যবসা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ও বাড়বে।”
জিসিসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একক ভিসা চালুর ফলে পর্যটকদের অবস্থানকাল বাড়বে, একাধিক শহরে ভ্রমণ বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যয়ের বিস্তার ছড়িয়ে পড়বে বিভিন্ন দেশে। আগামী কয়েক মাসে এই প্রকল্পের চূড়ান্ত বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে এবং আগামী বছর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই অনলাইন আবেদন পোর্টাল চালু করা হবে।