আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের জ্যামাইকায় আঘাত হেনেছে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সামুদ্রিক ঝড় হারিকেন মেলিসা। ঝড়টির তাণ্ডবে শহরের অনেক বাড়ি, অবকাঠামো এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আজ বুধবার জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হলনেস দেশটিকে ‘দুর্যোগপূর্ণ অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ঝড়ের প্রভাবে অব্যাহত বৃষ্টিপাত, ভূমিধসের আশঙ্কা এবং উঁচু জলাধারের কারণে সাধারণ মানুষকে ঘরের ভেতর থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঝড়ের পরে সবচেয়ে বড় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে কুমিরের হামলার। স্থানীয় জলাধার, নদী ও খালের পানির স্তর বেড়ে যাওয়ায় কুমিররা আবাসিক এলাকায় প্রবেশ করছে। সাউথইস্ট আঞ্চলিক স্বাস্থ্য অফিস সতর্ক করে জানিয়েছে, “পানির উচ্চ স্তরের কারণে কুমিরগুলি লোকালয়ে প্রবেশ করতে পারে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন কেন্দ্রের পরিচালক মাইকেল ব্রেনান সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানান, ভারী বৃষ্টিপাত এবং বিধ্বংসী বাতাস কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে। তিনি বলেন, “এখনও আরও ৬–১২ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হতে পারে। পরিস্থিতি এখনও বিপজ্জনক।”
হারিকেনের কারণে জ্যামাইকার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। অনেক স্থানে গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। সরকারি ও স্থানীয় কর্মকর্তারা এখন ক্ষয়ক্ষতির নিরূপণ এবং জরুরি সহায়তার জন্য কাজ শুরু করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হারিকেন মেলিসার ধ্বংসলীলার পরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে আরও কিছু দিন লাগবে। তাছাড়া ঝড়টি কিউবার দিকে এগোতে থাকা অবস্থায় ক্যাটাগরি-৫ থেকে দুর্বল হয়ে ক্যাটাগরি-৪ এ পরিণত হলেও ধ্বংসের তাণ্ডব চালানোর জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল।
স্থানীয়রা সতর্ক থাকার পাশাপাশি কুমির এবং বন্যপ্রাণী থেকে নিরাপদে থাকার উপায় অনুসরণ করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জলাধার ও নদীর পাশে বসবাসরত মানুষদের বাড়ি এবং সম্পত্তি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সরকারি জরুরি পরিষেবা এখন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সরাসরি সহায়তা দিচ্ছে।
সাউথইস্ট আঞ্চলিক স্বাস্থ্য অফিস জনসচেতনতার জন্য ঘোষণা দিয়েছে, কুমির বা অন্য প্রাণীর সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শ এড়াতে হবে এবং পানি বৃদ্ধি বা ভূমিধসের খবর নজরদারি করতে হবে।
এর মধ্যেই জ্যামাইকার মানুষ ধ্বংসস্তূপ, বৃষ্টিপাত ও কুমিরের ভয়ঙ্কর সংমিশ্রণে আতঙ্কিত। দেশটির জরুরি বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন ও রেসকিউ দল সক্রিয়ভাবে উদ্ধার ও সহায়তা কার্যক্রম চালাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, সামুদ্রিক ঝড় এবং অতিবৃষ্টির প্রভাবে কুমিরের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তাই আবাসিক এলাকা এবং শিশুদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
এশিয়ানপোস্ট /এফআরজে