আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যায় হার্ভার্ডের সরকারি অনুদান হিসেবে প্রাপ্য ২২০ কোটি ডলার স্থগিতে যে আদেশ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, সেটিকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দেশটির ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট আদালতের বিচরক অ্যালিসন বারোস এক রায়ে এ ঘোষণা দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেছেন, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২০ কোটি ডলারের সরকারি অনুদান স্থগিতে যে আদেশ ট্রাম্প দিয়েছিলেন, তা বৈধ ছিল না এবং ভবিষ্যতেও সরকারি অনুদানের অর্থ বন্ধ করতে পারবে না ট্রাম্প প্রশাসন।
উল্লেখ্য যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রাচীন, অভিজাত এবং সমৃদ্ধতম বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ড। মার্কিন শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পান। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীদের হার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি। গত এপ্রিলে ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেন, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিবিদ্বেষ এবং অতি বামপন্থি রাজনৈতিক দর্শন উসকে দিচ্ছে হার্ভার্ড। বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ‘সঠিক পথে আনতে’ হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে একগুচ্ছ আদেশও পাঠান তিনি।
তবে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ সেসব আদেশ মেনে চলতে অপারগতা জানালে বিশ্ববিদ্যালটির প্রাপ্য ২২০ কোটি ডলারের সরকারি অনুদান স্থগিত করেন ট্রাম্প। এদিকে ট্রাম্প এই স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর একে ‘প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ’ উল্লেখ করে ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট আদালতে মামলা করে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ। গতকাল সেই মামলারই রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
বস্তুত, ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট আদালতের এই রায় হার্ভার্ডের জন্যে একটি বড় বিজয়। আদালত রায় ঘোষণা করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন গারবার এক বিবৃতিতে বলেন, “এই রায়ের মাধ্যমে আদালত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক স্বাধীনতা, জটিল বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চশিক্ষার মৌলিক নীতিমালাগুলোকে স্বীকৃতি দিয়েছেন।”
অন্যদিকে এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলের ইঙ্গিত দিয়েছে হোয়াইট হাউস। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র লিজ হিউস্টন এক বিবৃতিতে বলেছেন, “যে বিচারক এ রায় দিয়েছেন, তিনি একজন অ্যাক্টিভিস্ট এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে নিয়োগ পেয়েছিলেন। আমরা মনে করি, যুক্তরাষ্ট্রর করদাতাদের অর্থ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার কোনো সাংবিধানিক অধিকার হার্ভার্ডের নেই এবং ভবিষ্যতে এই বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে সরকারি অনুদান পায়, তা আমরা দেখব।” সূত্র : রয়টার্স
এশিয়ানপোস্ট/আরজে