আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
বিশ্বের শীর্ষ ধনী, উদ্যোক্তা-শিল্পপতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রাক্তন উপদেষ্টা ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে এবার হোয়াইট হাউজে মাদক সেবনের অভিযোগ উঠেছে। গুঞ্জন উঠেছে যে ট্রাম্পের উপদেষ্টা হিসেবে যে কয়েক মাস হোয়াইট হাউজে তিনি ছিলেন, নিয়মিত মাদকসেবন করতেন।
সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তর ওভাল অফিসে এক ব্রিফিংয়ে ট্রাম্পকে এ সম্পর্কে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমি সত্যিই এ ব্যাপারে কিছু জানি না। তবে আমার মনে হয় এমন কিছু ঘটে নি…মানে আমি আশা করছি যে এমন কিছু ঘটেনি।”
“আমি চাই তার ভালো হোক, খুবই ভালো হোক; সত্যিই চাই।” এ প্রসঙ্গে এর বেশি আর কিছু বলতে চাননি ট্রাম্প।
মাস্কের বিরুদ্ধে মাদকে অভ্যস্থতার গুঞ্জন নতুন নয়। বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানি টেসলা, নভোযান, নভোযানের যন্ত্রাংশ এবং মহাকাশ অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রস্তুতকারী কোম্পানি স্পেসএক্স এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের মালিকের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিকবার মাদক সেবনের তথ্য জানা গেছে। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযানে ট্রাম্পের সঙ্গে নিয়মিতই দেখা যেতো মাস্ককে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সে সময় নিয়মিত কেটামাইন, এক্সটাসি এবং সাইকেডেলিক মাশরুম— এই তিন ধরনের মাদক নিতেন মাস্ক।
গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বড় অঙ্কের চাঁদা দিয়েছিলেন মাস্ক। এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা তহবিলে কমপক্ষে ২৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার চাঁদা দিয়েছিলেন মাস্ক।
তার পুরস্কারও অবশ্য তিনি পেয়েছিলেন ট্রাম্পের কাছ থেকে। নির্বাচনে জয়ী হয়ে শপথ নেওয়ার পর সরকারি কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও সরকারি ব্যয় সংকোচন করতে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি বা ডজ নামের একটি দপ্তর খোলেন ট্রাম্প। সেই দপ্তরের প্রধান করা হয় মাস্ককে। ডজের প্রধান কার্যালয় ছিল হোয়াইট হাউজে। ডজ প্রধান হিসেবে মাস্ক তখন নিয়মিতই হোয়াইট হাউসে আসতেন।
সম্প্রতি কর মওকুফ এবং প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি সংক্রান্ত একটি সরকারি বিলে ট্রাম্প সাক্ষর করায় মতানৈক্য শুরু হয় মাস্ক ও তার মধ্যে। এই মতানৈক্যের এক পর্যায়ে গত মে মাসের শেষ দিকে ট্রাম্প প্রশাসন থেকে অব্যাহতি নেন মাস্ক।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাস্ক আগেও নিয়মিত মাদক সেবন করতেন, তবে হোয়াইট হাউজে প্রবেশ করার পর থেকে তার সেবনের মাত্রা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছিল।
এদিকে সোমবার নিউইয়র্ক টাইমসের এই প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যা’ এবং ‘কল্পনাপ্রসূত’ বলে উল্লেখ করেছেন মাস্ক।
এক এক্সবার্তায় মাস্ক বলেছেন, “আমি এক সময় কেটামাইন নিতাম। এটি আমাকে মনের অন্ধকার গহ্বর থেকে বের হতে সহযোগিতা করত। তবে এটা বেশ আগের কথা। গত কয়েক বছরে আমি মাদক নিইনি।”
“পরিষ্কারভাবে বলছি, আমি মাদক সেবন করি না। নিউইয়র্ক টাইমসের যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তা পুরোপুরি মিথ্যা ও কল্পনাপ্রসূত।” সূত্র : এএফপি, এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড
এশিয়ান পোস্ট/আরজে