আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী ইসরাইল-অধিকৃত হাইফা বন্দরে নৌ অবরোধ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। ইরানি বার্তা সংস্থা ইসনা জানান, ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারিয়ি গত সোমবার এক বিবৃতিতে হাইফা বন্দরে নৌ অবরোধ শুরুর সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, “ইসরাইলি শত্রুবাহিনীর বর্বর হামলা ও ফিলিস্তিনি জনগণের অবরোধ ও দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দেওয়ার জবাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
বিবৃতিতে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এই ঘোষণার পর থেকে হাইফা বন্দর আনুষ্ঠানিকভাবে ইয়েমেনের সামরিক লক্ষ্যগুলোর তালিকায় যুক্ত হয়েছে। এছাড়াও, হাইফা বন্দরে অবস্থানরত বা সেদিকে যাত্রারত সকল জাহাজের মালিক কোম্পানিগুলোকে এই সতর্কতা ও নির্দেশনা গুরুত্বসহকারে মানতে বলা হয়েছে। বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন ও অবরোধ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হলে ইয়েমেনের সকল সামরিক কার্যক্রম স্থগিত করা হবে।
ফিলিস্তিন মুক্তি আন্দোলন (PFLP) এক বিবৃতিতে ইয়েমেনের হাইফা বন্দর অবরোধের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, “গাজায় ইসরাইলি বর্বরতার জবাবে ইয়েমেনের এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ প্রতিরোধ সংগ্রামের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।”
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল ইসরাইলি বাহিনীর ব্যাপক হামলায় অন্তত ১২৬ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় শহীদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৩,৪৮৬ জন এবং আহত ১৫১,৩৯৮ জন।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে যে, গাজার উত্তরে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সাথে সংঘর্ষে তাদের ৬০১ ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিটের এক সদস্য নিহত হয়েছে। ইসরাইলি নিরাপত্তা সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, গাজা থেকে আহত সেনাদের বহনকারী দুটি সামরিক হেলিকপ্টার বের সেবার ‘সোরোকা’ হাসপাতালে অবতরণ করেছে।
ইসরাইলি গণমাধ্যম জানায়, সংঘর্ষে কমপক্ষে একজন ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছেন। এই সেনাটি ‘বন্ধুদের গুলিতে’ নিহত হয়েছে বলে খবরে দাবি করা হয়।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনীর সরাসরি হামলায় ইন্দোনেশিয়া হাসপাতালের জেনারেটর ধ্বংস হয়ে গেছে, যার ফলে হাসপাতালটি সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। মন্ত্রণালয় সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, “জেনারেটর ধ্বংস হওয়া মানে চিকিৎসা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড ভেঙে যাওয়া এবং পুরো গাজা জুড়ে হাসপাতালগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ সেবাগুলো সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া।”
যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন করে ইসরাইলি বাহিনী লেবাননের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক ড্রোন হামলা চালিয়েছে। সবশেষ হামলায় দক্ষিণ লেবাননের হুলা শহরে এক লেবাননি নাগরিক তার বাসার সামনে ড্রোন হামলায় শহীদ হয়েছেন। এছাড়াও, কাফরকিলা শহরে ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে এক লেবাননি নাগরিক কাঁধে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
লেবাননি সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইসরাইলি ড্রোন দক্ষিণ লেবাননের আল-জাহিরা শহরে একটি গাড়িতে বোমা ফেলেছে, যাতে গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও, বিনত জিবেইলের ওয়াদি আল-আইয়ুন এলাকায় একটি মোটরসাইকেলে ড্রোন হামলায় দুইজন আহত হয়েছেন।
এশিয়ান পোস্ট/আরজে