রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৪৪ অপরাহ্ন
নোটিশ :
Eid Bazar ! Eid Bazar ! Held on 30th March Saturday @ Paterson Firemanhall, Adress 226 Walnut ST, Paterson, NJ 07522 /  9th International Women's Day Award Held on April 27, 2024 @ The Brownston, 251 West Broadway, Paterson, NJ .7522 Ticket 70 Dollar Per Person Get Tickets From www.eventbrite.com

ইথিওপিয়ার আগ্নেয়গিরির ছাই দক্ষিণ এশিয়ায়

রিপোর্টার / ৩০ বার
আপডেটের সময় : রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৪৪ অপরাহ্ন

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

ইথিওপিয়ার হায়লি গুবি আগ্নেয়গিরি প্রায় ১২ হাজার বছর নিষ্ক্রিয় থাকার পর আবার অগ্ন্যুৎপাত করেছে। আগ্নেয়গিরি থেকে উঠে আসা বিপুল পরিমাণ ধোঁয়া ও ছাই আকাশে প্রায় ১৪ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠে গেছে এবং সেই ছাই ভেসে পৌঁছেছে দক্ষিণ এশিয়ার আকাশেও। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

টুলুজ আগ্নেয়ছাই পরামর্শ কেন্দ্র (ভিএএসি) জানিয়েছে, অগ্ন্যুৎপাতের সময় যে ঘন ধোঁয়ার স্তম্ভ তৈরি হয়, তা উচ্চতায় ১৪ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠে গিয়ে পূর্ব আফ্রিকা পেরিয়ে আরব উপদ্বীপ ও পরে দক্ষিণ এশিয়ার আকাশে ছড়িয়ে পড়ে। ইথিওপিয়া থেকে শুরু হয়ে ইয়েমেন, ওমান হয়ে ভারতের উত্তরাঞ্চল এবং পাকিস্তানের আকাশ পর্যন্ত সেই ছাই ভেসে যায়। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে—আকাশের দিকে উঠছে সাদা রঙের ঘন ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডলী, যা স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

রোববার কয়েক ঘণ্টা ধরে ইথিওপিয়ার আফার অঞ্চলের হায়লি গুবি আগ্নেয়গিরিটি অগ্ন্যুৎপাত করে। রাজধানী আদ্দিস আবাবা থেকে উত্তর-পূর্বে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার দূরে, ইরিত্রিয়া সীমান্তের কাছে অবস্থিত এই আগ্নেয়গিরি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫০০ মিটার উচ্চতায় এবং পূর্ব আফ্রিকার রিফট ভ্যালির ভেতরে পড়েছে। দুটি ভূ-তাত্ত্বিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থান হওয়ায় এখানকার ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির কার্যক্রম ঐতিহাসিকভাবেই তুলনামূলকভাবে বেশি।

ভিএএসি জানিয়েছে, অগ্ন্যুৎপাতের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ছাইয়ের মেঘ আরব সাগর অতিক্রম করে দক্ষিণ এশিয়ার দিকে ধাবিত হয়। বিশেষত ইয়েমেন ও ওমান অতিক্রম করার পর ছাইয়ের মেঘ ভারত ও পাকিস্তানের উত্তরাংশে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও এই ছাই মানুষের স্বাস্থ্যে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি করেনি, তবে বিমান চলাচলে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোকে বিকল্প রুট অনুসরণ করতে হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের গ্লোবাল ভলকানিজম প্রোগ্রাম জানিয়েছে, হোলোসিন যুগের শুরু থেকে—অর্থাৎ বরফ যুগের শেষের পর গত প্রায় ১২ হাজার বছর ধরে—হায়লি গুবি আগ্নেয়গিরিতে কোনো অগ্ন্যুৎপাতের রেকর্ড পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ বিরতির পর এই অগ্ন্যুৎপাত বিজ্ঞানীদের জন্য বিশেষ গবেষণার সুযোগ তৈরি করেছে।

মিশিগান টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর সাইমন কার্নও ব্লুস্কাইয়ে নিশ্চিত করেছেন যে, হোলোসিন যুগে হায়লি গুবির কোনো অগ্ন্যুৎপাতের তথ্য নেই। তিনি জানান, এত দীর্ঘ সময় নিষ্ক্রিয় থাকার পর হঠাৎ অগ্ন্যুৎপাতের কারণ অনুসন্ধান করা জরুরি। এটি রিফট ভ্যালির নতুন ভূ-তাত্ত্বিক পরিবর্তনের ইঙ্গিতও দিতে পারে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অগ্ন্যুৎপাতের নিকটবর্তী এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে জরুরি কমিটি কাজ করছে। যদিও এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, তবে এলাকাটি এখনো ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। আগ্নেয়গিরিটির কার্যক্রম স্থিতিশীল হতে কিছুটা সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দীর্ঘ ১২ হাজার বছর পর হায়লি গুবির এই অগ্ন্যুৎপাত শুধু ইথিওপিয়াতেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বিশেষত ছাইয়ের মেঘ দক্ষিণ এশিয়ার আকাশে পৌঁছে যাওয়ার ঘটনাটি পরিবেশবিদ ও আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের বিশেষ নজর কাড়ছে।


এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর