আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
লিবিয়ার সাগরতীর থেকে গত দুই দিনে ৬১ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর মরদেহ উদ্ধার করেছে দেশটির জরুরি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ দ্য ইমার্জেন্সি মেডিসিন অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টারের বরাত দিয়ে রবিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সংস্থাটি জানায়, শুক্রবার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে পশ্চিমে অবস্থিত উপকূলীয় এলাকা মেল্লিতাহ থেকে ৩ জন ও জুওয়ারা থেকে ১২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরের দিন শনিবার জুওয়ারা, আবু কাম্মাশ এবং মেল্লিতাহ উপকূল থেকে আরও ৪৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করে উদ্ধারকর্মীরা।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ধারণা করছে, এসব মৃতদেহ সম্ভবত সেই নৌযানের যাত্রীদের, যা গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি লিবিয়ার উপকূল থেকে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল। ইঞ্জিনচালিত সেই নৌযানে কমপক্ষে ৭৫ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন, যাদের বেশিরভাগই সুদানের নাগরিক। সাগর পথে কিছুদূর যাওয়ার পর নৌযানটিতে আগুন ধরে যায় এবং পরে সেটি নিখোঁজ হয়ে যায়।
দ্য ইমার্জেন্সি মেডিসিন অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টারের বিবৃতিতে বলা হয়, উদ্ধার হওয়া মৃতদেহগুলোর কয়েকটি স্থানীয়ভাবে কবর দেওয়া হয়েছে। বাকি দেহগুলো অটোপসির জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আরও নিখোঁজদের সন্ধানে অনুসন্ধান অভিযান চলছে।
সমুদ্রপথে ইউরোপে পাড়ি জমানোর অন্যতম প্রধান রুট হলো লিবিয়া। দেশটির ভৌগোলিক অবস্থান এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে মানবপাচারকারীরা বছরের পর বছর ধরে এখানকার উপকূল ব্যবহার করছে। উন্নত জীবনের আশায় বিভিন্ন দেশের অভিবাসনপ্রত্যাশীরা ঝুঁকিপূর্ণ এই পথ বেছে নিচ্ছেন।
জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) তথ্যমতে, বর্তমানে লিবিয়ার প্রায় ১০০টি শহরে ৪৫টি দেশের নাগরিকসহ অন্তত ৮ লাখ ৯৪ হাজার ৮৯০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী বসবাস করছেন। তাদের অধিকাংশই ইউরোপে পৌঁছানোর অপেক্ষায় দিন গুনছেন।
লিবিয়ার অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা, দুর্বল সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও মানবপাচারকারীদের সক্রিয় ভূমিকার কারণে প্রায়ই এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এসব দুর্ঘটনা রোধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সমুদ্রপথে টহল জোরদারের বিকল্প নেই।
সূত্র: রয়টার্স
এশিয়ানপোস্ট / এফআরজে