আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
নিজেদের মিসাইল কর্মসূচি নিয়ে কোনো ধরনের আলোচনা করবে না বলে স্পষ্ট অবস্থান জানিয়েছে ইরান। দেশটির দাবি, এই মিসাইল প্রোগ্রাম সম্পূর্ণভাবে প্রতিরক্ষামূলক এবং বিদেশি শক্তির সম্ভাব্য হামলা ঠেকানোর উদ্দেশ্যেই এটি গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে এ বিষয়ে কোনো আন্তর্জাতিক আলোচনা বা সমঝোতার প্রশ্নই ওঠে না।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান মুখপাত্র ঈসমাইল বাকাঈ। তিনি বলেন, ইরানের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য মিসাইল কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি কোনোভাবেই আলোচনার টেবিলে তোলা হবে না।
সম্প্রতি ইরান নতুন করে মিসাইল মহড়া শুরু করেছে। এ মহড়া ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দখলদার ইসরায়েল। তাদের আশঙ্কা, মহড়ার আড়ালে ইরান ইসরায়েলের ওপর হামলার প্রস্তুতি নিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ইরানের পক্ষ থেকে মিসাইল কর্মসূচি নিয়ে কঠোর অবস্থান জানানো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
ঈসমাইল বাকাঈ বলেন, “ইরানের মিসাইল প্রোগ্রাম তৈরি করা হয়েছে দেশের ভূখণ্ড ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। এটি কোনো আক্রমণাত্মক কর্মসূচি নয়। বিদেশি আগ্রাসন প্রতিহত করার লক্ষ্যেই এই প্রোগ্রাম ডিজাইন করা হয়েছে। ফলে এ নিয়ে কোনো আলোচনার সুযোগ নেই।”
তিনি আরও বলেন, ইরান কখনোই নিজের বৈধ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়ে আপস করবে না। দেশটির প্রতিরক্ষা নীতি স্বাধীনভাবে নির্ধারিত এবং বাইরের কোনো চাপের কাছে তা নত হবে না বলেও জানান তিনি।
গত জুন মাসে দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের সরাসরি সংঘর্ষ শুরু হয়, যা টানা ১২ দিন স্থায়ী হয়েছিল। ওই সংঘাতে ইরান ইসরায়েলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নির্ভুল মিসাইল হামলা চালায় বলে দাবি করে তেহরান। ওই ঘটনার পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।
ইসরায়েল বরাবরই ইরানের মিসাইল ও পারমাণবিক কর্মসূচিকে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। তেল আবিবের অভিযোগ, এসব কর্মসূচির মাধ্যমে ইরান আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। তবে ইরান এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে এবং বারবার বলছে, তাদের সামরিক সক্ষমতা শুধুই প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানের এই স্পষ্ট বার্তা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জন্য একটি কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতার মধ্যে মিসাইল কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় অনাগ্রহ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইরান পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে তারা কোনো ছাড় দিতে রাজি নয় এবং মিসাইল কর্মসূচি দেশটির প্রতিরক্ষা কৌশলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবেই থাকবে।
সূত্র: আল আরাবিয়া