আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল থেকে দুইটি বাংলাদেশি মাছ ধরার ট্রলার ও ২৮ জন বাংলাদেশি জেলেকে আটক করেছে ভারতীয় উপকূলরক্ষীবাহিনী। জানা গেছে, আটককৃত জেলেরা প্রায় ১৫ দিন ধরে সমুদ্রে ভাসছিলেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত রোববার রাতে ‘এফ বি আল্লাহ মালিক’ নামের একটি বাংলাদেশি ট্রলার পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে অবৈধভাবে ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশ করে। পরে ওই ট্রলার ও জেলেদের নথিপত্র যাচাই-বাছাই শেষে তাদের আটক করা হয়। সোমবার সকালে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানার পুলিশ তাদের হস্তান্তর করে। পুলিশ জানায়, আটককৃতরা সুস্থ আছেন।
অন্যদিকে, অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার মোসাভানিপেটা উপকূলের কাছে বাংলাদেশি ১৩ জেলেকে আটক করেছে স্থানীয় উপকূলরক্ষীবাহিনী। তারা ভোলা জেলার বাসিন্দা এবং মাছ ধরার উদ্দেশ্যে সমুদ্রে বের হয়েছিল। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে তারা ভুলবশত ভারতীয় জলসীমা অতিক্রম করেন।
স্থানীয় জেলেরা রোববার তাদের নৌকা নোঙর করতে দেখেন এবং সাহায্যের জন্য স্থানীয়দের কাছে যান। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে খাবার, পানি ও ওষুধ সরবরাহ করেন এবং পুলিশকে খবর দেন। এরপর মেরিন পুলিশ ও স্থানীয় পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক তদন্ত করেন। ভাষাগত সমস্যার কারণে তাদের সঙ্গে যোগাযোগে অসুবিধা হলেও স্থানীয় কিছু জেলের সহযোগিতায় তথ্য সংগ্রহ সম্ভব হয়।
কলিঙ্গপত্তনম থানার পুলিশ জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় জলসীমায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটককৃতরা বিভিন্ন বয়সের; যেমন সজীব (২১), জাহাঙ্গীর (৩৫), সাব্বির (২৫), খোকন (৩২), মাকসুদ (৪০), মালিক (৮০), মো. ফারুক (৫৫), মাকসুদ (৫০), নাসির (৬৫), হেলাল (২৮), ফারুক (৫০), আলম (৪৬) ও শামীম (২১)।
কলিঙ্গপত্তনম মেরিন সার্কেল ইন্সপেক্টর বি. প্রসাদ রাও জানান, ট্রলারে কারিগরি ত্রুটির কারণে এই বাংলাদেশি জেলেরা আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা অতিক্রম করেছিলেন। তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন খাবারের অভাবে তারা শারীরিকভাবেও দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। তাদের আটক করার পর প্রয়োজনীয় খাবার ও ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়, তবে এই ধরনের আটকের মাধ্যমে দুই দেশের সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত জটিলতা এবং জেলেদের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার দিকেও নজর দেয়।