আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন তার বোন উজমা খান। মঙ্গলবার কারাগারে ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ইমরান খান শারীরিকভাবে ভালো আছেন, তবে তিনি মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।”
আদিয়ালা কারাগারের কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে উজমা খান কারাগারে ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতের সময় প্রায় ৩০ মিনিট ধরে দু’জনে কথা বলেন। কারাগারের বাইরে বিপুলসংখ্যক পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।
উজমা খান জানান, ইমরান খান সারাদিন তার কোঠায় থাকেন এবং খুব অল্প সময়ের জন্যই বাইরে যাওয়ার সুযোগ পান। কারও সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ নেই তার। তিনি বলেন, “তার ভাই ক্ষুব্ধ এবং মানসিক নির্যাতনের বিষয়ে উদ্বিগ্ন।”
ইমরান খান বর্তমানে ৭২ বছর বয়সী এবং আগস্ট ২০২৩ থেকে কারাগারে রয়েছেন। ২০২২ সালে সংসদে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে তার পদচ্যুতির পর একের পর এক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি। যদিও ইমরান খান এসব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছেন।
গত মাসে ইমরান খানের তিন বোন নোরীন নিয়াজি, আলিমা খান এবং উজমা খান নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ করেন। এর পর থেকে তার শারীরিক অবস্থাকে কেন্দ্র করে দলের নেতাকর্মী ও পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ইমরান খানের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ে। গত প্রায় ২৫ দিন ধরে কারাগারে তার সঙ্গে কারও সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া হয়নি। এর ফলে এমন গুজব ছড়ানোর পেছনে সরকারের গোপনীয়তার অভিযোগ ওঠে।
খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী সোহাইল আফ্রিদি জানান, ২৭ অক্টোবরের পর থেকে কেউই ইমরান খান বা তার স্ত্রী বুশরা বিবির সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। এই কারণে পিটিআই নেতাকর্মীরা সাক্ষাতের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। মঙ্গলবার ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডিতে পিটিআই বিক্ষোভের কারণে ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ১৪৪ জারি করা হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দুই শহরে ধারা ১৪৪ জারি করা হয়েছে এবং তা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট ও আদিয়ালা কারাগারের সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি পিটিআই সমর্থিত সংসদ সদস্যদের আইন মেনে চলার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, পিটিআই নেতাকর্মীরা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কারাগারে ইমরান খানের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। তারা তার প্রতি অনিচ্ছাকৃত নির্যাতনের অভিযোগ তুলছেন।