অনলাইন ডেস্কঃ
ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা সরকারি জমি বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ অন্যান্য আসামির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়ের করা পৃথক তিন মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।
দ্বিতীয় মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় মামলাটিতে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া প্রথম মামলায় শেখ হাসিনাকে ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ডসহ মোট তিনটি মামলায় ২১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন রায় ঘোষণা করেন। পৃথক তিন মামলায় মোট আসামি ৪৭, তবে ব্যক্তি হিসাবে আসামির সংখ্যা ২৩। প্রথম মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১২ জন, দ্বিতীয় মামলায় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৭ জন এবং তৃতীয় মামলায় শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জন।
রাজউকের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকারকে খালাস দিয়েছেন আদালত। সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে প্রতিটি মামলায় এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি একমাত্র আত্মসমর্পণকারী আসামি হিসেবে কারাগারে উপস্থিত ছিলেন এবং আদালতে নিয়মিত উপস্থিত ছিলেন। অপর আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের পক্ষ থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়নি।
দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা আফনান জান্নাত কেয়া মোট ৭৯ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলা পরিচালনা করেন। তিনি আদালতে সংগৃহীত তথ্য-প্রমাণাদি উপস্থাপন করে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণের চেষ্টা করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা দীর্ঘ সময় ধরে তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করে ত্রুটিগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেন। এছাড়া একমাত্র আত্মসমর্পণকারী খুরশীদ আলমকে শুধু হুকুমের গোলাম প্রমাণের চেষ্টা করা হয়।
মামলাগুলোতে ১৭ থেকে ২০ নভেম্বরের মধ্যে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের সর্বোচ্চ সাজার দাবি করেন, আর আসামিপক্ষ মামলাটিকে হয়রানিমূলক দাবি করেন।
মামলার অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী পদে থাকাকালীন শেখ হাসিনা তার পরিবারের সদস্যদের নামে প্লট বরাদ্দের জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। সংশ্লিষ্ট অন্য আসামিদেরকে প্রভাবিত করে ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নং রাস্তার তিনটি ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়া হয়।
এই মামলাগুলোর ছয়টি পৃথকভাবে দায়ের করা হয়েছিল। আজ তিনটির রায় ঘোষণা হয়েছে, বাকি তিনটির রায় আগামী ১ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হবে। শেখ পরিবারের অন্যান্য আসামিরা হলেন: শেখ রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক। অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারাও মামলার অন্তর্ভুক্ত।