আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
নির্বাচনে হেরে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করার অভিযোগে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেয়ার বলসোনারোকে গত সেপ্টেম্বরে ২৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দেশটির সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) নির্দেশ দিয়েছে, বলসোনারোকে তার দণ্ড ভোগ শুরু করতে হবে।
সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, রাজধানী ব্রাসিলিয়ার একটি পুলিশ ঘাঁটিতে ১২ স্কয়ার ফুটের বেডরুমে তিনি কারাদণ্ড ভোগ করবেন। ৭০ বছর বয়সী বলসোনারো ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
নির্বাচনে হেরে, বলসোনারো সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভার ক্ষমতা গ্রহণ আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন। এছাড়া, লুলা ও তার নির্বাচনী মিত্র গেরালডো আল্কমিনকে হত্যার ছকও তিনি কষেছিলেন। তবে সামরিক বাহিনীর প্রধানরা তাকে সহায়তা করতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে, লুলা দা সিলভার ক্ষমতা গ্রহণের পর বলসোনারো ও তার ছয় সহযোগীকে অভিযুক্ত করা হয়।
সুপ্রীম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, তারা ব্রাজিলের গণতন্ত্রকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়ার এবং দেশকে একনায়কতন্ত্রের দিকে পরিচালিত করার চেষ্টা করেছিলেন। বিচারক আলেক্সান্দ্রে দে মোরায়েস রায় দেন, দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের সময় শেষ হওয়ায় সাবেক প্রেসিডেন্টকে তার দণ্ড ভোগ শুরু করতে হবে।
গত আগস্ট থেকেই গৃহবন্দি ছিলেন বলসোনারো। সেই সময় তার পায়ে একটি ইলেকট্রনিক অ্যাংকেল ট্যাগ লাগানো ছিল। তবে বলসোনারো এটি কেটে ফেলার চেষ্টা করেন। পরে শনিবার তাকে পুলিশের হাতে নেওয়া হয়।
বলসোনারো ছাড়াও তার ছয় সহযোগীকে তাদের দণ্ড ভোগ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ব্রাজিলের আদালত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা এবং সামরিক অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা রোধে কঠোর অবস্থান নিল।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই রায় লাতিন আমেরিকায় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অনেক বিশ্লেষক বলছেন, বলসোনারোর অভিযান ব্যর্থ হওয়ায় ব্রাজিলের গণতন্ত্রকে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে। সামরিক অভ্যুত্থান প্রতিরোধ এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য আদালতের এই রায়কে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে।