আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ইংল্যান্ডে আগামী বছর রেলভাড়া বাড়ানো হবে না— ব্রিটিশ সরকারের এমন ঘোষণায় তিন দশক পর প্রথমবারের মতো ভাড়া স্থির থাকছে। দেশটিতে আগামী তিন বছর রেলভাড়া না বাড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্ত জীবনযাত্রার ব্যয় কমানো এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই নেওয়া হয়েছে। রোববার (২৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মার্চ পর্যন্ত ইংল্যান্ডে রেলভাড়া অপরিবর্তিত থাকবে। এ সিদ্ধান্ত মূলত রেগুলেটেড ভাড়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে— যেখানে সিজন টিকিট, অফ-পিক রিটার্নসহ কিছু নির্দিষ্ট টিকিট অন্তর্ভুক্ত থাকে। চলতি বছরের মার্চে রেলভাড়া গড়ে ৪.৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। সাধারণত প্রতিবছর জানুয়ারিতে রেলভাড়া সমন্বয় করা হলেও এর হার নির্ধারিত হতো আগের বছরের জুলাইয়ে খুচরা মূল্যসূচক (আরপিআই)–এর ওপর ১ শতাংশ যোগ করে। যদিও সবসময় এই সূত্র অনুসরণ করা হয়নি।
বাজেট ঘোষণার আগে জীবনযাত্রার ব্যয় কমানো নিয়ে যখন আলোচনা তুঙ্গে, ঠিক তখনই রেলভাড়া না বাড়ানোর এ ঘোষণা এলো। ব্রিটিশ সরকার বলছে, মানুষের দৈনন্দিন ব্যয়ের একটি বড় অংশ হলো যাতায়াত ব্যয়। তাই রেলভাড়া স্থির রাখার সিদ্ধান্ত সরাসরি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করবে।
২০২১ সাল থেকে ইংল্যান্ডে রেলভাড়া জানুয়ারির পরিবর্তে মার্চে সমন্বয় করা হচ্ছে। সরকারি এক সূত্র জানিয়েছে, রেগুলেটেড ভাড়া স্থির থাকলেও অনিয়ন্ত্রিত ভাড়া বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সাধারণত অনিয়ন্ত্রিত ভাড়াও রেগুলেটেড ভাড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই সমন্বয় করা হয়। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এক বছরে অনিয়ন্ত্রিত ভাড়া বেড়েছে ৫.৫ শতাংশ— যা রেগুলেটেড ভাড়ার চেয়ে ১.১ শতাংশ বেশি। একই সময়ে মোট রেলভাড়া বেড়েছে ৫.১ শতাংশ।
যুক্তরাজ্যের রেল অপারেটরদের সংগঠন রেল ডেলিভারি গ্রুপ সরকারের এ সিদ্ধান্তকে যাত্রীবান্ধব উদ্যোগ বলে মন্তব্য করেছে। সংগঠনের এক মুখপাত্র বলেন, “রেলব্যবস্থা আরও উন্নত করতে আমরা সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছি। ভাড়া স্থির রাখার ঘোষণা যাত্রীদের জন্য নিঃসন্দেহে ইতিবাচক খবর।”
ব্রিটিশ রেল ১৯৯৬ সালে বেসরকারীকরণের পর থেকে ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ড— এই তিন অঞ্চলের ৪৫ শতাংশ রেলভাড়া সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে এবার ভাড়া স্থির রাখার ঘোষণা শুধুমাত্র ইংল্যান্ডে চলাচলকারী ট্রেন ও সংশ্লিষ্ট রেল কোম্পানিগুলোর জন্য প্রযোজ্য হবে বলে জানানো হয়েছে।