আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
পাকিস্তান তাদের আকাশসীমায় ভারতীয় বিমান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে। পাকিস্তানের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (পিএএ) এ বিষয়ে এয়ারম্যানদের কাছে বৃহস্পতিবার একটি নোটিশ জারি করে। গত মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চারদিনব্যাপী সংঘর্ষের পর থেকে পাকিস্তান ভারতের আকাশসীমায় বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আসছে, যা এখন পর্যন্ত কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞাটি চারদিন পর শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা আগেই আরও সময় বৃদ্ধি পেয়ে আগামী ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
এই নিষেধাজ্ঞায় ভারতে নিবন্ধিত সব বিমান, ভারতীয় এয়ারলাইন্সের মালিকানাধীন, পরিচালিত ও লিজকৃত বিমান এবং ভারতের সামরিক বিমান পাকিস্তানের আকাশসীমায় চলাচল করতে পারবে না। এর সঙ্গে ভারতও পাকিস্তানের আকাশসীমায় একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলো বিশেষ করে এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগো উল্লেখযোগ্য আর্থিক ও সময়ের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ থাকায় ভারতের বিমানেরা দীর্ঘ পথ পরিক্রমা করতে বাধ্য হচ্ছে, যা জ্বালানি খরচ বাড়িয়েছে এবং ভ্রমণের সময়ও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়ার দাবি, তারা চীনের শিনজিয়াং প্রদেশের ওপর দিয়ে উড়ার অনুমতি পেলে এই পরিস্থিতি কিছুটা লাঘব হবে। শিনজিয়াংয়ের ওপর দিয়ে গেলে যাত্রার সময় অনেকাংশে কমে যাবে এবং জ্বালানি খরচও কমবে।
পাকিস্তানের আকাশসীমায় নিষেধাজ্ঞার কারণে এয়ার ইন্ডিয়ার জ্বালানি খরচ প্রায় ২৯ শতাংশ বেড়েছে এবং কিছু গন্তব্যে সময় বেড়েছে তিন ঘণ্টারও বেশি। অন্যদিকে ইন্ডিগোসহ অন্যান্য ভারতীয় বিমান সংস্থাও অর্থনৈতিক ও কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাবের সম্মুখীন হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার ফলে পাকিস্তানের সরকারও আকাশসীমা ব্যবহারের মাধ্যমে আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ভারত-পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে বিমান চলাচল নিষেধাজ্ঞা রাজনীতির একটি অংশ হিসেবে দেখা হয়। দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা ও সামরিক সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে এই নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর রাখা হচ্ছে। তবে এর প্রভাব সাধারণ যাত্রী থেকে শুরু করে বিমান সংস্থাগুলোর ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও যাতায়াত ব্যবস্থায় এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অশান্তি ও অবিশ্বাসের প্রতিফলন। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো কূটনৈতিক আলোচনা ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের মাধ্যমে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা শিথিলের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে।