আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ২১ নভেম্বর হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হবে বলে ট্রাম্প নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে নিশ্চিত করেছেন।
নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র হিসেবে জোহরান মামদানির নাম ২০২৫ সালের নির্বাচনে প্রথমবার উঠে আসলেও তিনি সেখানকার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক চরিত্রে পরিণত হয়েছেন। নির্বাচনে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হন তিনি। যদিও ট্রাম্প প্রশাসন নির্বাচনের আগে তাকে আটকানোর জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছিল এবং বিজয় ঠেকাতে সরকারি বরাদ্দ আটকে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। ট্রাম্প নিজে পর্যন্ত ঘোষণা দিয়েছিলেন, মামদানি যদি নির্বাচিত হন, তাহলে নিউইয়র্কের জন্য বরাদ্দ সরকারি অর্থ আটকে দেওয়া হবে।
বিভিন্ন মার্কিন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প ও তার দল রিপাবলিকান পার্টি মামদানির বিরুদ্ধ প্রচারে প্রায় ২৪০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে। এর পরেও মামদানির জয়কে কেউ ঠেকাতে পারেনি। আগামী ১ জানুয়ারি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র হিসেবে তিনি শপথ গ্রহণ করবেন।
মামদানির নির্বাচনী প্রচারণায় মূল প্রতিপক্ষ ছিলেন রিপাবলিকান পার্টি এবং ট্রাম্প প্রশাসন। এই জটিল রাজনৈতিক অবস্থার মাঝেও তার জয়ের ফলে নিউইয়র্কের রাজনীতি নতুন মাত্রা পেয়েছে। যদিও ট্রাম্প এবং তার প্রশাসনের অনেক পক্ষ এখনও মামদানির জয় মেনে নেননি, তারা মামদানির সঙ্গে বৈঠকের জন্য সম্মতি জানিয়েছেন।
মামদানিও ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রচারণার সময় নিউইয়র্কের ভোটারদের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে জানা গেছে। তবে ট্রাম্পের ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টের পর মামদানির টিম থেকে এখনও এই সাক্ষাৎ সংক্রান্ত কোনো অফিসিয়াল মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ ও গ্লোবাল সিটির মেয়র হিসেবে নিউইয়র্কের মেয়র পদ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। আর তাই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এই সাক্ষাৎ মার্কিন রাজনীতির একটি বড় ইভেন্ট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে মামদানির বৈঠক দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা কমিয়ে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে নতুন দিক নির্দেশ করতে পারে। যদিও রাজনৈতিক পার্থক্য এবং আদর্শগত ভিন্নতা অনেকাংশে বিদ্যমান থাকলেও এই বৈঠকের মাধ্যমে নিউইয়র্ক ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব হতে পারে।
মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর মামদানির ফোকাস থাকবে নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এবং শহরের বাসিন্দাদের জন্য উন্নত সেবা নিশ্চিত করা। সে জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতা অপরিহার্য। ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্কের আশায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
নিউইয়র্ক সিটির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মামদানির জয়কে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে বহু বছর ধরে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির দ্বন্দ্ব বিরাজমান ছিল। আগামী দিনগুলোতে এই সম্পর্ক কেমন দাঁড়ায়, তা সময়ই বলবে।