আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু হতে পারে— এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না ইসলামাবাদ। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানিয়েছেন, ভারত যে কোনো সময় সীমান্তে নাশকতা বা পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু করতে পারে এবং পাকিস্তান এ বিষয়ে সর্বোচ্চ প্রস্তুত অবস্থায় আছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যম সামা টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ বলেন, “আমরা ভারতকে কোনোভাবেই উপেক্ষা করছি না, কোনো পরিস্থিতিতেই তাদের বিশ্বাস করছি না। আমার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ভারতের পক্ষ থেকে পূর্ণমাত্রার কোনো যুদ্ধ বা নাশকতার শঙ্কা উড়িয়ে দিতে পারি না। এরমধ্যে সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশও থাকতে পারে। আমাদের সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।”
ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি জানান, গত জুনে ভারত যে ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনা করেছিল, সেটি ছিল “৮৮ মিনিটের ট্রেলার”। তাঁর ভাষায়, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কেমন আচরণ করতে হয়— সেই শিক্ষা দিতে ভারত সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
জেনারেল দ্বিবেদীর ওই ‘৮৮ মিনিটের ট্রেলার’ মন্তব্যের পরই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী যুদ্ধ-সতর্কতার কথা জানান। বিশ্লেষকদের মতে, দুই দেশের বাগ্যুদ্ধ দক্ষিণ এশিয়ায় ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়াচ্ছে।
এর আগে খাজা আসিফ আরও কঠোর ভাষায় ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আমরা প্রস্তুত। আমরা পূর্ব সীমান্ত (ভারত) এবং পশ্চিম সীমান্ত (পাকিস্তান) দুই জায়গায় শত্রুর মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত। আল্লাহ আমাদের প্রথম রাউন্ডে সহায়তা করেছেন। তিনি আমাদের দ্বিতীয় রাউন্ডেও সহায়তা করবেন। যদি তারা চূড়ান্ত রাউন্ড চায়, তাহলে আমাদের যুদ্ধ ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকবে না।”
এদিকে গত মাসে সীমান্তে ব্যাপক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান। সেই সময় পাকিস্তান আফগান ভূখণ্ডে বিমান হামলাও চালায়। পরে কাতার ও তুরস্কসহ কয়েকটি দেশের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তান সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যেই রয়েছে। এর সঙ্গে ভারত-পাকিস্তান বৈরিতা নতুন করে যুক্ত হওয়ায় সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। দুই দেশের পারমাণবিক সক্ষমতা থাকায় যেকোনো সামরিক উত্তেজনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও উদ্বেগ তৈরি করে।
পাকিস্তানের মন্ত্রীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ভারত সীমান্তে অনুপ্রবেশ, নাশকতা কিংবা সীমিত সামরিক হামলা চালাতে পারে। আর ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তাদের মন্তব্য এসব আশঙ্কাকে আরও জোরালো করেছে। যুদ্ধ-সংকট দেখা দিলে সেটি শুধু দুই দেশ নয়— গোটা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতাকেই সরাসরি হুমকির মুখে ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র: সামা টিভি