আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
চীনের সঙ্গে চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে দেশটিতে থাকা জাপানি নাগরিকদের জন্য বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে টোকিও। জাপান সরকার বলছে, চীনে অবস্থানরত নাগরিকরা যেন সন্দেহজনক ব্যক্তি, দল এবং ভিড়পূর্ণ এলাকা এড়িয়ে চলেন। পরিস্থিতি যেকোনো সময় অস্থির হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি তাইওয়ান ইস্যুতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির একটি মন্তব্য থেকে দুই দেশের টানাপোড়েন শুরু হয়। চলতি মাসে পার্লামেন্টে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন— তাইওয়ানে চীন হামলা চালালে জাপানের অস্তিত্বই হুমকিতে পড়তে পারে, এবং এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে জাপান সামরিক উপায়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হবে। তাঁর এই বক্তব্য বেইজিং মোটেও সহজভাবে গ্রহণ করেনি।
পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক করতে টোকিও মন্ত্রিসভার শীর্ষ সচিব মিনোরু কিহারাকে চীনে পাঠায়। তিনি বেইজিংয়ে পৌঁছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান লিউ জিনসং-এর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে লিউ জানান— বেইজিং আশা করে, প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য জাপান প্রত্যাহার করবে। উত্তরে কিহারা বলেন— জাপান চীনের ওপর সামরিক হামলা চালাবে না, তবে প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি তার বক্তব্য প্রত্যাহার করছেন না, কারণ তাঁর বক্তব্য জাপান সরকারের সরকারি অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়।
কিহারা আরও বলেন, জাপানের অবস্থান স্পষ্ট— তাইওয়ান ইস্যু শান্তিপূর্ণ আলোচনা-সমঝোতার ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত।
এদিকে বৈঠকের পর চীনা সংবাদমাধ্যমগুলো জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে কঠোর সমালোচনায় কাঠগড়ায় দাঁড় করায়। সিনহুয়া তাদের এক প্রতিবেদনে তাকাইচির বিরুদ্ধে ‘জাপানের সামরিক দানবকে পুনরুজ্জীবিত করার’ অভিযোগ তোলে।
চীন পরিস্থিতি আরও কঠোর করে জাপান থেকে সামুদ্রিক খাদ্য আমদানি স্থগিত করে। পাশাপাশি চীনা নাগরিকদের জাপান ভ্রমণ এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেয়। চীনের ১০টিরও বেশি এয়ারলাইন ঘোষণা করেছে— তারা জাপানে কোনো ফ্লাইট চালাবে না।
জাপান সাধারণত চীনা পর্যটকদের প্রধান গন্তব্য। প্রতিবছর জাপানে মোট পর্যটকের প্রায় তিন ভাগের এক ভাগই চীনা নাগরিক।
এমন পরিস্থিতিতে চীনে জাপানের দুটি চলচ্চিত্রের শুটিং চলছিল, যা সম্প্রতি চীনা কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দিয়েছে। এসব ঘটনার পরই টোকিও চীনে বসবাসরত জাপানি নাগরিকদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দেয়।
সূত্র: রয়টার্স