আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিরক্ষা কমিশনার আন্দ্রিয়ুস কুবিলিউস বলেছেন, রাশিয়ার সম্ভাব্য ড্রোন হামলা কার্যকরভাবে মোকাবিলা করার জন্য ইউরোপ এখনও প্রস্তুত নয়। তিনি বলেছেন, নিজেদের সুরক্ষায় ইউরোপের উচিত ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে পরীক্ষিত সক্ষমতাকে নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত করা, না হলে তা হবে ‘ঐতিহাসিক ভুল’।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) ভিলনিয়াসে দেওয়া এক বক্তৃতায় কুবিলিউস বলেন, “ন্যাটো গত সেপ্টেম্বর মাসে পোল্যান্ডের আকাশে রুশ ড্রোন ভূপাতিত করার পর ইউরোপে ড্রোন প্রতিরক্ষা জোরদারের তৎপরতা শুরু হলেও তা খুব ধীর গতিতে এগোচ্ছে। কেন আমাদের দুই বছরের বেশি সময় লেগেছে এবং পোল্যান্ড, বাল্টিক রাষ্ট্র ও রোমানিয়ার বিরুদ্ধে রুশ ড্রোন উসকানির পরও এখনো আমরা রুশ ড্রোন শনাক্ত ও সাশ্রয়ী উপায়ে ধ্বংস করতে প্রস্তুত নই?”
তিনি প্রশ্ন করেন, “রাশিয়া তো শিখছে, আমরা কি শিখছি?” পোল্যান্ডের ঘটনার পর ন্যাটো পূর্ব ফ্ল্যাঙ্কে অতিরিক্ত সেনা ও আরও ড্রোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে। ইইউও একটি ড্রোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে, তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত নকশা হয়নি এবং বাস্তবায়নেও সময় লাগবে।
কুবিলিউস বলেন, ইউরোপ যখন নিজেদের প্রতিরক্ষা ঘাটতি পূরণে ব্যস্ত, তখন ইউক্রেনে যুদ্ধরত প্রায় ৮ লাখ অভিজ্ঞ সেনার সক্ষমতাকে ইউরোপের বিস্তৃত প্রতিরক্ষা কাঠামোর অংশ হিসেবে বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, “এটা না করলে আমরা একটি ঐতিহাসিক ভুল করব, যা আমাদের দুর্বল করবে এবং ইউক্রেনকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”
ইউরোপীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভবিষ্যতে ন্যাটোর কোনো দেশেও হামলার চেষ্টা করতে পারেন। এই আশঙ্কার কারণে ইইউ দ্রুত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারে কাজ করছে।
বর্তমানে ন্যাটো পূর্ব ফ্ল্যাঙ্কে নিরাপত্তা জোরদার করতে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন ও উন্নত ড্রোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে। তবে এই ব্যবস্থাগুলো পূর্ণাঙ্গ ও কার্যকরী করতে এখনও সময় লাগবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ইউক্রেনের অভিজ্ঞ সেনাদের অন্তর্ভুক্তি হলে তা প্রতিরক্ষা সক্ষমতা অনেক বাড়বে এবং রুশ আক্রমণের মোকাবিলা আরো শক্তিশালী হবে। কুবিলিউসের সতর্ক বার্তা হলো, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে ইউরোপ ও ইউক্রেন দুই পক্ষই দুর্বল ও বিপদগ্রস্ত হবে।