অনলাইন ডেস্কঃ
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়েছেন, ইসরায়েল কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের আশ্রিত বা নির্ভরশীল রাষ্ট্র নয়। বরং ইসরায়েল একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ, যা নিজের নিরাপত্তা ও সিদ্ধান্ত নিজেই নির্ধারণ করবে। সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সহায়তা, গাজা যুদ্ধ এবং অস্ত্র সরবরাহ ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েনের পর এই মন্তব্য করেছেন তিনি।
নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু, সহযোগী, কিন্তু কোনোভাবেই তাদের অধীন নয়। ইসরায়েল নিজের নিরাপত্তা নিয়ে কারও নির্দেশে কাজ করবে না। আমাদের জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই আমার সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”
সম্প্রতি গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব ইসরায়েলকে সংযম দেখাতে আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন প্রশাসন গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের বিষয়েও ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে। তবে নেতানিয়াহু বলেন, “আমাদের সেনারা নিজেদের প্রতিরক্ষায় যুদ্ধ করছে। গাজা আমাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। আমরা কোনো বিদেশি নির্দেশে নয়, নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।”
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ‘গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী’, তবে মানবিক মূল্যবোধের প্রশ্নে তারা অবস্থান থেকে সরে আসবে না। ওয়াশিংটন ও তেলআবিবের মধ্যকার সাম্প্রতিক এই মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েন মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েল দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান কৌশলগত মিত্র হলেও সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্ক কিছুটা চাপের মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে গাজা অভিযানের ধরন ও মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় নেতানিয়াহু সরকারের অবস্থান আরও কঠোর হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, নেতানিয়াহুর এই বক্তব্য মূলত দেশীয় রাজনীতির উদ্দেশ্যেও দেওয়া, যাতে তিনি তার সমর্থকদের কাছে শক্ত অবস্থান প্রদর্শন করতে পারেন। তবে বাস্তবে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা ছাড়া ইসরায়েলের পক্ষে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ পরিচালনা কঠিন হবে বলেও মন্তব্য করেছেন পর্যবেক্ষকরা।
এশিয়ানপোস্ট / এফআরজে