আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার গাজা সিটিতে গত সোমবার রাত থেকে স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এরমধ্যে তাদের হামলায় গাজা সিটির টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে গাজা সিটি পুরো বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
ফিলিস্তিনি টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি অথরিটি জানিয়েছে, উত্তর গাজার প্রধান লাইনে ইসরায়েলি দখলদাররা হামলা চালানোর পর ইন্টারনেট ও টেলিফোন সেবা বন্ধ হয়ে যায়।
ইসরায়েলি হামলার পর সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে গাজা সিটির মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়েছিল বার্তাসংস্থা এপির সাংবাদিকরা। কিন্তু তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এরআগে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, আজ বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার আটজনই ছিলেন গাজা সিটির। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুরা রয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজা সিটিতে চলমান স্থল হামলায় অংশ নিয়েছে তাদের দুটি ডিভিশন। এ দুটি ডিভিশনে হাজার হাজার সেনা রয়েছে।
স্থল হামলা শুরুর আগে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজা সিটিতে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করে দখলদার ইসরায়েল। বিমান ও ড্রোন থেকে মিসাইল ও বোমা ফেলে গাজা সিটির প্রায় সব উঁচু ভবন ধসিয়ে দেওয়া হয়েছে। গাজা সিটিতে স্থল হামলার আগে আশপাশের অঞ্চলগুলোতে অবস্থান নিয়েছিল ইসরায়েলি সেনারা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের ১৬২ নম্বর এবং ৯৮ নম্বর ডিভিশন গাজা সিটিতে অবস্থান করছে এবং সেখানে হামলার পরিধি বাড়াচ্ছে। এ দুই ডিভিশনের সঙ্গে ৩৬ নম্বর ডিভিশন পরবর্তীতে যোগ দেবে। এর মাধ্যমে গাজা সিটিতে ইসরায়েলি সেনার সংখ্যা আরও কয়েক গুণ বাড়বে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানের খুবই বড় এবং কার্যকর সশস্ত্র বাহিনী রয়েছে, যারা প্রচলিত যুদ্ধে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করেছে।’’ মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের আগ্রাসন ঠেকাতে যদি জাতিসংঘের বাইরে কোনও ঐক্যবদ্ধ শক্তি গঠিত হয়, তাহলে পাকিস্তান তাতে অংশ নেবে কি না, কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এমন প্রশ্নের জবাবে ইসহাক দার ওই মন্তব্য করেছেন।
কাতারে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পর আরব-ইসলামি সম্মেলনের আগে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের ওই স্বাক্ষাৎকার রেকর্ড করা হয়েছিল। আল জাজিরার উপস্থাপক ওসামা বিন জাভেদ পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, গাজায় হস্তক্ষেপ করতে জাতিসংঘের বাইরে কোনও ঐক্যবদ্ধ সংস্থা গঠনের পরিকল্পনা আছে কি না?
জবাবে দার বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মতো একটি ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা যেতে পারে। তিনি বলেন, উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তারা কোনও দেশ তাদের কথা না শুনলে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেয়। এটি যে কোনও দেশের জন্য ভয়াবহ অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়।
পাকিস্তানের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আরব দেশগুলো এবং আরব লীগের আলোচনায় ‘‘একটি যৌথ নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের’’ কথা উঠেছে। তিনি বলেন, এটা কেন নয়? এতে সমস্যা কী? তাদের অবশ্যই এমন একটি বাহিনী থাকা উচিত। নিজেদের সক্ষমতা এবং শক্তি অনুযায়ী একটি ব্যবস্থা তৈরি করা উচিত। এটি আক্রমণের জন্য নয়, বরং শান্তির জন্য করা উচিত—আগ্রাসী শক্তিকে থামাতে, দখলদারকে থামাতে এবং এমন কাউকে থামাতে যে কারও কথা শুনতে চায় না।
এরপর আল জাজিরার উপস্থাপক পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, যদি এমন বাহিনী গঠন করা হয়, তখন পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে পাকিস্তানের অবস্থান কী হবে? জবাবে দার বলেন, পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তান অবশ্যই উম্মাহর সদস্য হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করবে।
সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, আলজাজিরা