শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪৯ অপরাহ্ন
নোটিশ :
Eid Bazar ! Eid Bazar ! Held on 30th March Saturday @ Paterson Firemanhall, Adress 226 Walnut ST, Paterson, NJ 07522 /  9th International Women's Day Award Held on April 27, 2024 @ The Brownston, 251 West Broadway, Paterson, NJ .7522 Ticket 70 Dollar Per Person Get Tickets From www.eventbrite.com

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত শত শত মানুষ

রাজু / ৩৬ বার
আপডেটের সময় : শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪৯ অপরাহ্ন
গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত শত শত মানুষ

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

এক সপ্তাহের সামান্য কয়েকদিন আগের ঘটনা। মাহমুদ কাসিম তার ছেলে কাদেরকে হারিয়েছেন। ১৯ বছর বয়সী কাদের মধ্য গাজায় মার্কিন সমর্থনে চলা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। কাসিম বলেছেন, “ওইদিন রাত ১১টা নাগাদ আমি এবং ওর মা শেষবারের মতো ফোনে কাদেরের সঙ্গে কথা বলি। ও আমাদের জানায়, নেটজারিম ত্রাণকেন্দ্রে নিরাপদ জায়গায় আছে। আমি ওকে সাবধানে থাকতে বলি। ১টা নাগাদ আমি ওকে ফোন করি। কিন্তু ফোনে সাড়া পাইনি। দুইটা পর্যন্ত অপেক্ষা করি।”

তারপর কাসিম মধ্য গাজায় যান। হাসপাতালগুলোতে খোঁজ নেন। শেষপর্যন্ত কাদেরের মরদেহ খুঁজে পান। দেখা যায়, অনেকগুলো বুলেটের আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে। কাসিম বলেছেন, “একজন ১৯ বছর বয়সী তো সবে তার জীবন শুরু করেছে। সে খাবারের বাক্স আনতে গিয়েছিল। আমি চাইনি। কিন্তু ছেলে মনে করলো, পরিবারকে সাহায্য করা উচিত। ওখানে অবর্ণনীয় অবস্থা। মানুষের জীবন চলে যাচ্ছে। না হামাস, না ইসরায়েল, না আরব দেশগুলো, কেউ আমাদের জন্য ভাবে না।”

গাজায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছেন। বাস্তবতা হলো, গাজার ২৩ লাখ মানুষ পুরোপুরি ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল। আর ত্রাণ আসে ইসরায়েল হয়ে। গাজার প্রায় সকলেই ঘরছাড়া হয়েছিলেন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রিপোর্ট, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজার ৫৭ হাজার মানুষ মারা গেছেন। গত মে মাসের সমীক্ষা অনুসারে ৯৩ শতাংশ মানুষ খাদ্যসংকটে ভুগছেন।

জাতিসংঘ ত্রাণ দেওয়া শুরু করেছে, আমেরিকা-ইসরায়েলের সংস্থা জিএইচএফ তিনটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র খুলেছে। তা সত্ত্বেও গাজার মানুষ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম খাবার পাচ্ছেন। ক্রাণভর্তি ট্রাক সশস্ত্র গোষ্ঠী বা বেসামরিক মানুষ লুট করে নিচ্ছে, এমন ঘটনাও ঘটছে। এর মধ্যে ইসরায়েলের সেনা উত্তর ও দক্ষিণ গাজায় বিমান হামলা চালাচ্ছে। তারা সেখান থেকে মানুষকে সরে যেতে বলেছে।

আবু লিবদার বয়স ৪৪ বছর। পাঁচ সন্তানের বাবা। খান ইউনিস দিয়ে যখন একটা ত্রাণবোঝাই ট্রাক যাচ্ছিল, তিনি একটা ময়দার বস্তা নিতে পেরেছিলেন। তিনি ফোনে বলেছেন, “আমি জানি এটা ঝুঁকির কাজ। কিন্তু আমাদেরও তো কিছু খেতে হবে। হাজার হাজার মানুষ ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছে। হঠাৎ শুনতে পেলাম দুটো গোলা ফাটার শব্দ। আমি দেখলাম অনেক মানুষ রাস্তায় পড়ে গেলেন। অনেকের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল। সৌভাগ্যবশত, আমার আঘাত লেগেছে হালকা।”

গাজায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে ইসরায়েলের সেনার গুলি ও গোলার আঘাতে পাঁচশর বেশি মানুষ মারা গেছেন। তারা ত্রাণের অপেক্ষায় ছিলেন। হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইসরায়েলসহ বেশ কিছু দেশ।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই দাবি অগ্রাহ্য করে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে জানিয়েছে, “হামাস বেসামরিক মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছে। গাজার মানুষের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, হামাস ইসরায়েলের সেনার ওপর মিথ্যা অভিযোগ করছে। তারা মৃতের সংখ্যা বাড়িয়ে বলছে, ভুয়া ভিডিও ছড়াচ্ছে।”

গত মঙ্গলবার অক্সফাম, সেভ দ্য চিল্ডরেনসহ ১৩০টি বড় সেবা প্রতিষ্ঠান ও এনজিও জিএইচএফকে বলেছে, তারা যেন ত্রাণশিবির বন্ধ করে দেয়। কারণ, ফাউন্ডেশনের ত্রাণশিবির সামরিক এলাকা বা তার কাছে, সেখানে হাজার হাজার মানুষ যাচ্ছেন। তাদের গুলির মুখে পড়তে হচ্ছে।

জিএইচএফের চেয়ারম্যান জনি মুর ব্রাসেলসে বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছেন, তারা ত্রাণশিবির বন্ধ করবেন না। তারা এখনো পর্যন্ত পাঁচ কোটি ৫৫ লাখ মিল বিতরণ করেছেন। তারা জাতিসংঘ ও অন্য ত্রাণসংস্থার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে ইচ্ছুক।

তিনি বলেছেন, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রতিদিন মৃত্যুর তালিকা দেয় এবং বলে তারা জিএইচএফের ত্রাণ নিতে গিয়েই মারা গেছেন।  ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) আগে অনেকবার বলেছে, ত্রাণ নিতে গিয়ে সামরিক পজিশনের খুব কাছে যখন মানুষ চলে আসে, তখন তারা সাবধান করে দেওয়ার জন্য গুলি ছোড়ে। তবে এর ফলে কতজন মারা গেছেন সেই সংখ্যা তারা জানায়নি।

এশিয়ান পোস্ট/আরজে


এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর