এশিয়ান পোস্ট ডেস্কঃ
“প্যারিস থেকে রোম, মাদ্রিদ থেকে বার্লিন — গোটা ইউরোপ এখন তাপের আগুনে পুড়ছে। চলছে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ, ভেঙে যাচ্ছে রেকর্ড, হুমকির মুখে জনজীবন।” ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসসহ ইতালি, স্পেন, জার্মানি ও গ্রিসে তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি — যা জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির ওপর ফেলছে মারাত্মক প্রভাব।” প্যারিস: ৪০°C রোম: ৪২°C মাদ্রিদ: ৪১°C এথেন্স: ৪৩°C
ইতিমধ্যে প্যারিসে রেড অ্যালার্ট জারি করা হেয়েছে। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে তাপমাত্রা এতটাই বেড়েছে যে, মঙ্গলবার থেকেই আইফেল টাওয়ার সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। জনজীবন বিপর্যস্ত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পরিবহন—সবখানেই সতর্কতা। দেশটির আবহাওয়া বিভাগ প্যারিসসহ ১৬টি অঞ্চলে রেড অ্যালার্ট ঘোষণা করেছে। বিশেষ করে দক্ষিণ ও পূর্ব ফ্রান্সে তাপমাত্রা পৌঁছেছে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিসীমায়। তীব্র গরমের কারণে ফ্রান্সে ১ হাজার ৩৫০টি স্কুল আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিশুরা যেন অসুস্থ না হয়, সে জন্যই এই পদক্ষেপ।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বোলোগনায় একটি নির্মাণস্থলে অসুস্থ হয়ে পড়ে ৪৭ বছর বয়সি একজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে তুরিনের পশ্চিমে একটি পর্যটন কেন্দ্রে আকস্মিক বন্যার সময় ৭০ বছর বয়সি এক ব্যক্তির ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
জার্মানির আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, তাপমাত্রা পৌঁছতে পারে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তাপের কারণে রাইন নদীর পানি অনেক নিচে নেমে গেছে। ফলে জাহাজগুলোকে কম পণ্য নিয়ে চলতে হচ্ছে—যার কারণে পরিবহন ব্যয় বেড়ে গেছে, তৈরি হয়েছে পণ্যের সরবরাহ সংকট।
তীব্র গরমে বাড়ছে হিট স্ট্রোক ও ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে বয়স্ক ও শিশু রোগীদের ভিড়। ইউরোপের বেশ কয়েকটি শহরে জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট। এই তাপপ্রবাহের কারণে ইউরোপজুড়ে দেখা দিয়েছে ব্যাপক খরা এবং দাবানলের ঝুঁকি। গ্রিস ও স্পেনে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি বনাঞ্চলে আগুন লেগেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অস্বাভাবিক গরমের পেছনে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন। পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তাপপ্রবাহ আরও দীর্ঘস্থায়ী এবং তীব্র হয়ে উঠছে। চিকিৎসক ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার সতর্ক করা হচ্ছে—বাইরে বের হলে সানস্ক্রিন ও ছাতা ব্যবহার করুন। পর্যাপ্ত পানি পান করুন । শিশু ও বৃদ্ধদের রোদে না যেতে দিন।
জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাব হিসেবে আজকের এই তাপপ্রবাহ আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে—সবচেয়ে উন্নত অঞ্চলগুলোও ঝুঁকিমুক্ত নয়। এখনই সচেতন না হলে ভবিষ্যৎ হবে আরও ভয়ংকর।
এশিয়ান পোস্ট /আরজে