শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
নোটিশ :
Eid Bazar ! Eid Bazar ! Held on 30th March Saturday @ Paterson Firemanhall, Adress 226 Walnut ST, Paterson, NJ 07522 /  9th International Women's Day Award Held on April 27, 2024 @ The Brownston, 251 West Broadway, Paterson, NJ .7522 Ticket 70 Dollar Per Person Get Tickets From www.eventbrite.com

নয়াদিল্লিকে সংলাপের প্রস্তাব দিলেন শেহবাজ

রাজু / ১৫ বার
আপডেটের সময় : শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কাশ্মির, নদীর পানি বণ্টনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতকে বিস্তৃত সংলাপে আসার প্রস্তাব দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। রাজনীতি-কূটনীতিকে একপাশে রেখে যুদ্ধ উসকে ওঠে, তাহলে তা দুই দেশের জন্য সীমাহীন যন্ত্রণা ব্যতীত আর কিছু বয়ে আনবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

শেহবাজ বলেছেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে বিস্তৃত সংলাপে বসতে চাই। কাশ্মির এবং অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন নিয়ে সেখানে আলোচনা হবে এবং সেই আলোচনা শেষ হওয়ার পর আমরা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় যৌথ তৎপরতার ব্যাপাারে আলোচনা করতে পারি।”

“এবং আমি মনে করি এটা জরুরি। কারণ সন্ত্রাসবাদের বিস্তারের কারণে বর্তমান বিশ্বে যেসব দেশ সবচেয়ে বিপদে আছে, পাকিস্তান তাদের মধ্যে অন্যতম। এই সন্ত্রাসবাদের কারণে আমরা গত কয়েক দশকে আমরা ৯০ হাজার প্রাণ হারিয়েছি, সেই সঙ্গে আর্থিকভাবে ১৫ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছি।

সম্প্রতি ভারতের সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’ এর পাল্টা জবাব হিসেবে ‘অপারেশন বুনিয়ান উন মারসুস’ পরিচালনা করেছে পাকিস্তান। সেই অভিযানের সাফল্য উদযাপন করতে শুক্রবার রাজধানী ইসলামাবাদে ইয়োম-ই-তাশাকুর বা ধন্যবাদজ্ঞাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেহবাজ শরিফ। বিশেষ অতিথির তালিকায় ছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির, এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমেদ বাবর, নৌবাহিনী প্রধান চিফ অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, কূটনীতিক, শহীদদের পরিবারের সদস্যরা এবং ক্রিকেট ও শোবিজ সেলিব্রেটিবৃন্দ।

প্রধান অতিথির ভাষণে শেহবাজ শরিফ দাবি করেন, ভারতের জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলাকে ঘিরে যে সংঘাত শুরু হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে— তাতে পাকিস্তান জয়ী হয়েছে; তবে তারপরও পাকিস্তান শান্তি চায়।

“আমরা যুদ্ধে জয়ী হয়েছি, কিন্তু তারপরও আমরা শান্তি চাই। আমরা আমাদের শত্রুদের শিক্ষা দিয়েছি এবং একই সঙ্গে আগ্রাসনের নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা চাই বিশ্বের এই অংশটিও (ভারত-পাকিস্তান) কঠোর পরিশ্রম, অক্লান্ত প্রচেষ্টা এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবেশীর মতো জীবনযাপনের মাধ্যমে অন্যান্যদের মতো সমৃদ্ধ ও প্রগতিশীল হোক।”

“কারণ সত্যিই যদি পরমাণু শক্তিধর দুই শক্তির মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে যায়, তাহলে এই উপমহাদেশে বসবাসরত ১৬০ কোটিরও বেশি মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে। পরিস্থিতি হয়তো এমন পর্যায়ে পৌঁছাবে যে কীভাবে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল—  সেই বিবরণ দেওয়ার জন্যও হয়ত কেউ বেঁচে থাকবে না।”

ইউম-ই-তাশাকুর উপলক্ষে শুক্রবার ভোরে ফজরের আজানের পর রাজধানী ইসলামাবাদে ৩১ রাউন্ড গুলি ছোড়ার মাধ্যমে গান স্যালুট প্রদান করা হয় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে। একই সময়ে প্রাদেশিক রাজধানীগুলোতে ছোড়া হয় ২১ রাউন্ড গুলি। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, কার্যালয় এবং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সব ভবন ও কার্যালয়ে উত্তোলন করা হয় পাকিস্তানের পতাকা এবং দেশটির সব বড় শহরে শোভাযাত্রা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় হামলা চালিয়ে ২৬ জন পর্যটককে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। নিহত এই পর্যটকদের সবাই পুরুষ এবং অধিকাংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী।

এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার একটি শাখা এই টিআরএফ।

অতর্কিত এই হামলার পর তাৎক্ষণিকভাবে সিন্ধু নদের পানি বণ্টনচুক্তি ও পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিলসহ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কয়েকটি কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয় ভারত। জবাবে ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ, ভিসা বাতিলসহ কয়েকটি পাল্টা পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তানও।

দুই দেশের মধ্যে চলমান এ উত্তেজনার মধ্যেই গত ৭ মে পাকিস্তানের অধিকৃত কাশ্মিরসহ বিভিন্ন এলাকায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এক সংক্ষিপ্ত সেনা অভিযান পরিচালনা করে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী। ইসলাবাদের তথ্য অনুযায়ী, অপারেশন সিঁদুর অভিযানে পাকিস্তানে মোট ৫১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে  ১৩ জন সেনাসদস্য, বাকিরা বেসামরিক। এদের পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও ৭৮ জন।

ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর সেনা অভিযানের তিন দিনের মধ্যে ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ শুরু করে পাকিস্তান। আরবি ‘বুনিয়ানুম মারসুস’-এর বাংলা অর্থ সীসার প্রাচীর। নয়াদিল্লির তথ্য অনুযায়ী পাকিস্তানের পাল্টা এই অভিযানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৫ জন সদস্য ও ১৬ জন বেসামরিক নিহত হয়েছেন।

এদিকে পাল্টাপাল্টি এই সংঘাতের মধ্যেই তৎপর হয় যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের চাপে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ। ১০ মে শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে এই যুদ্ধবিরতি।

সূত্র : ডন

এশিয়ান পোস্ট/আরজে


এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর