চলে গেলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া
অনলাইন রিপোর্টারঃ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে শক্তি ও ধৈর্যের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তিনি ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সুস্থ শরীরে নিজ বাসভবন থেকে কারাগারে গিয়েছিলেন। তবে পরবর্তী সময় কখনো হুইলচেয়ার ছাড়া চলতে পারেননি। মোটামুটি শেষ সাড়ে পাঁচ বছরের অধিকাংশ সময়ই কাটিয়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হয়ে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের নেতারা ২০২০ সাল থেকে অভিযোগ করে আসছেন যে, কারাগারে খালেদা জিয়াকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। তাদের দাবি ছিল, আওয়ামী লীগ সরকার তাঁকে ‘স্লো পয়জনিং’ করেছে।
২০০৩ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন যুক্তরাষ্ট্রে হাঁটুর অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন তিনি। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যে তিন মাস চিকিৎসাধীন থাকাকালীন চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন যে তিনি সুস্থ আছেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি গুলশানের বাসভবন থেকে নিজে হাঁটেই গাড়িতে উঠে কারাগারে যান। পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতেও নিজেই পা চালিয়ে প্রবেশ করেন। পাঁচ বছরের সাজা পাওয়ার পর নিজেই হাঁটতে হাঁটতে কারাগারের সেলে যান।
তবে এরপর আর কখনোই হাঁটতে দেখা যায়নি তাঁকে। যতবার হাসপাতাল নেওয়া হয়েছে, হুইলচেয়ারেই যেতেন। ২০০ বছরের পুরোনো নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগার ভবন ২০১৬ সালের জুলাইয়ে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। নতুন কারাগারে বন্দিদের স্থানান্তরিত করা হলেও খালেদা জিয়াকে সেখানে না নিয়ে পরিত্যক্ত ভবনে রাখা হয় ২৫ মাস। বিএনপি বলেছিল, স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে থাকার কারণে শ্বাসকষ্টের কারণে তাঁর ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গতকাল তাঁর মৃত্যুর পর চিকিৎসকরা জানান, ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় ওষুধে সাড়া মিলছিল না।
করোনা মহামারির সময়ে ২০২০ সালে ছয় মাসের জন্য নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পেয়েছিলেন। শর্ত ছিল বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়া এবং রাজনীতি না করা। পরে এই ছয় মাসের মেয়াদ আটবার বাড়ানো হয়। মুক্তির সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার দাবি করেন বিএনপি ও পরিবার, যা সরকার প্রত্যাখ্যান করে। ২০২৩ সালের আগস্টে গুরুতর অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে চিকিৎসকরা এসে তাঁর লিভারে অস্ত্রোপচার করেন।
তার অসুস্থতা নিয়ে তখন দেশের শীর্ষ নেত্রীও মন্তব্য করেন যে, ৮০ বছর বয়সী একজন মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
এশিয়ানপোস্ট/ এফআরজে