আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লিতে অবস্থান নিয়ে প্রথমবার প্রকাশ্যে মন্তব্য করলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। দেশটির রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এনডিটিভির এডিটর-ইন-চিফের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ভারতে থাকা সম্পূর্ণই তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, আর যে পরিস্থিতি তাকে ভারতে এনেছে— সেটিই এখন তার করণীয় নির্ধারণে প্রভাব ফেলছে।
গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার টানা ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। ঐ সময় মারাত্মক সহিংসতায় বহু মানুষ প্রাণ হারান, হাজারো মানুষ আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তিনি ভারতে যেতে বাধ্য হন। পরে ঢাকার বিশেষ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনে সরকারি দমন-পীড়নের অভিযোগে ৭৮ বছর বয়সী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করে। তার অনুপস্থিতিতেই আদালত এই রায় দেয়।
নয়াদিল্লিতে এইচটি লিডারশিপ সামিটে আলোচনায় অংশ নিয়ে জয়শঙ্করকে প্রশ্ন করা হয়— শেখ হাসিনা কি “যতদিন খুশি” ভারতে থাকতে পারবেন? উত্তরে তিনি বলেন, এটি ভিন্ন প্রশ্ন। তিনি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে ভারতে এসেছেন, আর সেই পরিস্থিতিই তার ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্তে স্পষ্টভাবে প্রভাব ফেলছে। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।
পরবর্তীতে তিনি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেন। বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক অবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করে জয়শঙ্কর বলেন, ভারত প্রতিবেশী দেশের জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দেখতে চায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে অতীতের নির্বাচনগুলো নিয়ে যারা বর্তমানে ক্ষমতায় আছেন তাদের আপত্তি ছিল বলে শোনা যায়। যদি সমস্যাটি মূলত নির্বাচনকেন্দ্রিক হয়, তাহলে প্রথম করণীয় হলো সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা।
জয়শঙ্কর আরও বলেন, ভারত সবসময় বাংলাদেশের মঙ্গল চায়। একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারত দেখতে চায় বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছাই যেন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্যপূর্ণ ও পরিপক্ক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করবে এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরও উন্নত হবে।
সূত্র: এনডিটিভি