আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
কারাবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দুই ছেলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, কর্তৃপক্ষ তাদের বাবার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে ‘‘অপরিবর্তনীয় কিছু’’ গোপন করছে। তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তার জীবিত থাকার কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় এই সন্দেহ তৈরি হয়েছে বলে কাসিম খান রয়টার্সকে জানান।
আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ইমরান খানের সঙ্গে স্বজন ও দলের নেতাকর্মীদের সাক্ষাতের সুযোগ স্থগিত রয়েছে। তাকে কারাগারে স্থানান্তর করার গুজব ছড়িয়ে পড়লেও এখনো তা নিশ্চিত হয়নি।
কাসিম বলেন, “আপনার বাবা নিরাপদ আছেন, আহত হয়েছেন, এমনকি বেঁচে আছেন কি না—এটা না জানা মানসিক নির্যাতনের মতো।” তিনি জানান, কয়েক মাস ধরে পরিবারের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে কোনও যাচাইযোগ্য যোগাযোগ করা যায়নি।
ইমরান খানের ব্যক্তিগত চিকিৎসকের কারাগারে প্রবেশাধিকারও এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। তবে পাকিস্তানের এক কারা কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ইমরান খান সুস্থ আছেন।
৭২ বছর বয়সী ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন। ২০২২ সালের অনাস্থা ভোটের পর একাধিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি। যদিও ইমরান দাবি করেন, এসব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
রাষ্ট্রীয় কোষাগার তোশাখানা থেকে সরকারি উপহার বেআইনিভাবে বিক্রির অভিযোগে প্রথম সাজা পেয়েছিলেন তিনি। এরপর কূটনৈতিক নথি ফাঁস ও দুর্নীতি মামলায় ১০ এবং ১৪ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন।
তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দাবি করে, এসব মামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ।
পরিবারের উদ্বেগ বেড়েছে দীর্ঘ যোগাযোগবিহীনতার কারণে। তাঁরা অভিযোগ করেন, ইমরানকে জনদৃষ্টি থেকে আড়াল করা হচ্ছে। টেলিভিশনগুলোতেও তার ছবি বা খবর প্রচার না করার নির্দেশ রয়েছে।
কাসিম বলেন, “কর্তৃপক্ষ তার বাবাকে আলাদা করে রেখেছে। তারা তাকে ভয় পায় কারণ তিনি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা।”
তিনি আরও জানান, শেষবার বাবা তাঁকে ২০২২ সালের নভেম্বরে দেখেছেন, যখন ইমরান একটি হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে ফিরে আসেন।
পরিবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে তাদের কাছে ইমরান খানের বর্তমান অবস্থা জানার জন্য আহ্বান জানিয়েছে এবং আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সাক্ষাতের সুযোগ পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে।