বঙ্গোপসাগরের তৎসংলগ্ন মালাক্কা প্রণালীতে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। ‘শেন-ইয়ার’ নামের এই ঘূর্ণিঝড় আজ বুধবার (২৬ নভেম্বর) আঘাত হানবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)।
আইএমডি জানিয়েছে, আজ সকালে গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। এবারের ঘূর্ণিঝড়টির নাম দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। শেন-ইয়ার শব্দের অর্থ “সিংহ”। ঘূর্ণিঝড়টি গতকাল রাতে ১০ কিলোমিটার গতিতে পশ্চিমাঞ্চলের দিকে এগোচ্ছে। আজ দুপুর পর্যন্ত এটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে সরতে থাকবে এবং দুপুরের আগে স্থলে আঘাত হানে ইন্দোনেশিয়ার উপকূল অতিক্রম করবে।
আগামী ২৪ ঘণ্টা ঘূর্ণিঝড়টি তার শক্তি ধরে রাখবে। এরপর ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যাবে। আইএমডি জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি ইন্দোনেশিয়ার কুতা মাকমুর থেকে ১০০ কিলোমিটার, মালয়েশিয়ার জর্জটাউন থেকে ২৬০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিম, নিকোবার দ্বীপপুঞ্জ থেকে ৬০০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণপূর্ব, এবং নিকোবার চর থেকে ৭৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল।
মালাক্কা প্রণালীর ঘূর্ণিঝড় ছাড়াও, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও শ্রীলঙ্কার তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি দুর্বল নিম্নচাপ অঞ্চল শনাক্ত হয়েছে। তবে এই ঘূর্ণিঝড় ইন্দোনেশিয়াতেই আঘাত হানবে; এটি ভারত বা বাংলাদেশের দিকে প্রবাহিত হবে না।
আইএমডি জানিয়েছে, বর্ষা পরবর্তী মৌসুমে শেন-ইয়ার দ্বিতীয় ঘূর্ণিঝড় যা উত্তর ভারত মহাসাগর বেসিনে সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে গত ২৮ অক্টোবর ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে ঘূর্ণিঝড় মোন্থা আঘাত হানে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মালাক্কা প্রণালীর ঘূর্ণিঝড় স্থানীয় অঞ্চলে শক্তিশালী বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া ও সম্ভাব্য সমুদ্র-স্রোতের ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। ইন্দোনেশিয়ার উপকূলীয় এলাকার মানুষদেরকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
আইএমডি আরও জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ এবং অবস্থান নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এটি দূর থেকে লক্ষ্য করা হচ্ছে যাতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। ইন্দোনেশিয়ার প্রশাসন ইতিমধ্যেই স্থানীয় এলাকাগুলিতে সতর্ক সংকেত জারি করেছে।
ঘূর্ণিঝড় শেন-ইয়ারের ফলে মালাক্কা প্রণালীর নৌপরিবহন ও সামুদ্রিক কার্যক্রমও প্রভাবিত হতে পারে। বিশেষ করে ছোট নৌকা ও জাহাজগুলোকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে জানিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি এবং সতর্কতার অংশ হিসেবে, স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে থাকা এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য ও জরুরি সামগ্রী সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।