এশিয়ান পোস্ট ডেস্কঃ
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর সেখানে আইনশৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাজাফরি সাজামসোয়েদ্দিন শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে জানান, গাজার জন্য ২০ হাজার সেনাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এবং দ্রুতই একটি পূর্ণাঙ্গ শান্তিরক্ষী টিম পাঠাতে ইন্দোনেশিয়া প্রস্তুত।
তিনি বলেন, এই টিমে থাকবে প্রশিক্ষিত সেনাদের পাশাপাশি বিশেষায়িত ডাক্তার, প্রকৌশলী এবং লজিস্টিক সহায়তাকারী সদস্যরা। ইন্দোনেশিয়ার লক্ষ্য হলো গাজায় যুদ্ধ-পরবর্তী পুনর্গঠন ও নিরাপত্তা রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা পালন করা।
সংবাদ সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, গাজায় শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর বিষয়ে দেশটি ইতোমধ্যে জাতিসংঘ এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অনুমোদনের আশ্বাস পেয়েছে। এখন শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের সম্মতির অপেক্ষা। তিনি বলেন, “আরব অঞ্চলের দেশগুলো— বিশেষ করে সৌদি আরব, জর্ডান, মিসর, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত যদি সবুজ সংকেত দেয়, তাহলে ইন্দোনেশিয়া আনন্দের সঙ্গে গাজা শান্তিরক্ষা মিশনে যুক্ত হবে।”
গত ২৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত একটি নতুন প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। ২০টি পয়েন্টের সেই প্রস্তাবে হামাস এবং ইসরায়েল উভয়ই সম্মতি দিলে ১০ অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। প্রস্তাবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল যুদ্ধ-পরবর্তী গাজায় একটি অস্থায়ী বেসামরিক টেকনোক্র্যাট সরকার গঠন এবং একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই বাহিনীর সদস্যরা নতুন সরকারের কাছে জবাবদিহিতার আওতায় থাকবে।
তবে এখনও যুদ্ধবিরতির এক মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও টেকনোক্র্যাট সরকার গঠনের কাজ দৃশ্যমান হয়নি। মধ্যপ্রাচ্যের বড় শক্তিগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো উদ্যোগ ঘোষণা করেনি, যা আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী গঠনের প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছে।
এদিকে ইন্দোনেশিয়ার এই উদ্যোগ মুসলিম বিশ্বের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর দেশটির অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে। গাজায় মানবিক সংকট এবং পুনর্গঠন কার্যক্রমে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেশটির কূটনৈতিক সক্রিয়তাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে বলেও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।
গাজার জন্য আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠন ও সেখানে ইন্দোনেশিয়ার সেনা উপস্থিতি ফিলিস্তিন প্রশ্নে বৈশ্বিক সহযোগিতা জোরদার করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এখন কেবল আঞ্চলিক সিদ্ধান্ত ও আন্তর্জাতিক সমন্বয়ের আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষা।
আকাশজমিন / আরআর