অনলাইন ডেস্কঃ
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি বিষাক্ত ধোঁয়াশায় ঘিরে পড়েছে। দীপাবলির আতশবাজি, যানবাহনের ধোঁয়া এবং কৃষিজ ফসল পোড়ানোর কারণে বায়ুদূষণের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সুপারিশকৃত দৈনিক সর্বোচ্চ সীমার তুলনায় ১৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ৩ কোটিরও বেশি মানুষের বসবাসকারী এই মহানগরী প্রতি বছর শীতকালে ঘন ধোঁয়াশায় আবদ্ধ থাকে।
শীতকালে ঠান্ডা বাতাস দূষণ সৃষ্টিকারী কণাগুলোকে ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি আটকে রাখে। এতে ফসলের খড় পোড়ানো, কল-কারখানা ও ভারী যানবাহনের ধোঁয়া মিলে বিষাক্ত পরিবেশ তৈরি হয়। তবে দীপাবলির সময় কয়েকদিন ধরে আতশবাজি পোড়ানোর কারণে দূষণ মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। প্রতি বছর এ সময়ে নয়াদিল্লি বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানীগুলোর তালিকায় উঠে আসে।
দীপাবলির কয়েকদিন ধরে টানা আতশবাজি পোড়ানোয় বাতাসে ক্ষতিকর কণার ঘনত্ব বেড়ে গেছে। তবে এই মাসে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট ‘সবুজ আতশবাজি’ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে, যা তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিকর কণা নির্গমন করে। কিন্তু গত বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, নিষেধাজ্ঞা প্রায়শই উপেক্ষা করা হয়।
পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘আইকিউএয়ার’ সোমবার জানিয়েছে, শহরের কিছু অংশে পিএম ২.৫ কণার মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ২৪৮ মাইক্রোগ্রামে পৌঁছেছে। এই ক্ষুদ্র কণাগুলো রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করতে পারে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সরকার জানিয়েছে, আগামী দিনগুলোতে বায়ুর মান আরও খারাপ হতে পারে। দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডিজেলচালিত জেনারেটরের ব্যবহার কমানো ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
নয়াদিল্লি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই মাসে প্রথমবারের মতো আকাশে বিমান দিয়ে ‘ক্লাউড সিডিং’-এর পরীক্ষা চালানো হবে। এই পদ্ধতিতে মেঘে লবণ বা রাসায়নিক ছুড়ে বৃষ্টি ঘটানোর চেষ্টা করা হয়, যাতে বাতাস পরিষ্কার হয়।
গত বছর দ্য ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ-এর একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ভারতে বায়ুদূষণজনিত কারণে ৩৮ লাখ মানুষ মারা গেছে। জাতিসংঘের শিশু সংস্থা সতর্ক করেছে, দূষিত বাতাসে শিশুরা শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এশিয়ানপোস্ট / আরজে