অনলাইন রিপোর্টারঃ
জনতা ব্যাংক থেকে প্রায় ২৯৭ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি ও আত্মসাতের মামলায় সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (২০ অক্টোবর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানান, মামলায় অভিযোগ অনুযায়ী ব্যাংক থেকে মর্টগেজ নেওয়া জমিতে বাস্তবে কোনো ভবন বা স্থাপনা না থাকা সত্ত্বেও ঋণগ্রহীতা মালিক হওয়ার আগেই ৩ কোটি ৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকায় স্থাপনাবিহীন জমি ক্রয় করে তা প্রায় ৬ হাজার ৯৯ মিলিয়ন টাকায় মূল্যায়ন দেখানো হয়। এরপর বিআরপিডি সার্কুলার নং ০৫/২০০৫ এবং এমওইই নির্দেশনা লঙ্ঘন করে ঋণ অনুমোদন ও বিতরণের মাধ্যমে মোট ২৯৭ কোটি ৩৮ লাখ ৮৭ হাজার ২৯৬ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন আতিউর রহমান ও আবুল বারকাত ছাড়াও জনতা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুছ ছালাম আজাদ, সাবেক পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, নাগিবুল ইসলাম দীপু, ড. আর এম দেবনাথ, আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান এবং মেসার্স সুপ্রভ স্পিনিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেনসহ মোট ২৬ জন।
তদন্তকালে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মেসার্স সুপ্রভ স্পিনিং লিমিটেডের পরিচালক মো. আবু তালহা, জনতা ব্যাংকের সাবেক এমডি মো. আব্দুল জব্বার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মোছাম্মৎ ইসমত আরা বেগমকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
দুদক জানায়, মামলার এজাহারে প্রথমে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। পরে তদন্তকালে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একই সময়ে আরও ছয়জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদের নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, “মামলার কার্যক্রম নিয়মমাফিক এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমাদের লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক লেনদেনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।”
এই মামলা ব্যাংকিং খাতের বড় ধরনের জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়ন্ত্রন এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
এশিয়ানপোস্ট / আরজে