আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। টানা কয়েকদিনের বিরোধের পর সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল থেকে আফগানিস্তানের নানগরহার প্রদেশের তোর্কহাম সীমান্তে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ভারী অস্ত্রের গর্জনে এলাকা কেঁপে ওঠে। গোলার শব্দে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ আতঙ্কে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পরপরই পাকিস্তান সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। এতে আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা শতাধিক শরণার্থী আটকা পড়ে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, অনেক শরণার্থীর কাছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে।
তোর্কহাম সীমান্তে সংঘর্ষের কারণ নিয়ে দুই পক্ষের ভিন্ন দাবি রয়েছে। পাকিস্তান বলছে, আফগান দিক থেকেই প্রথমে গুলি চালানো হয়। তবে আফগান কর্মকর্তারা জানান, পাকিস্তান সীমান্তে নতুন অবকাঠামো নির্মাণের চেষ্টা করায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
সীমান্তে কর্মরত এক কর্মকর্তা বলেন, “দুই দেশের সেনারা পরস্পরকে দোষারোপ করছে। তবে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪ জন নিহত ও ১২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।” সংঘর্ষ চলাকালে সীমান্তের দোকানপাট ও বাজার বন্ধ হয়ে যায়।
আফগান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, “আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। তবে আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমরা প্রস্তুত।”
অন্যদিকে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভ সাংবাদিকদের বলেন, “সীমান্তে হামলার ঘটনাকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। শান্তি চাই, কিন্তু নিরাপত্তা ছাড় নয়।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক সময়ে তালেবান সরকারের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক অবনতির দিকে যাচ্ছে। আফগান মাটিতে পাকিস্তানবিরোধী জঙ্গি সংগঠনগুলোর তৎপরতা বাড়ায় ইসলামাবাদ ক্ষুব্ধ। এই প্রেক্ষাপটে সীমান্তে সংঘর্ষ দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জটিল করে তুলতে পারে।
তোর্কহাম সীমান্ত আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে অন্যতম প্রধান বাণিজ্য ও যাতায়াতপথ। গত কয়েক মাস ধরে এই অঞ্চলে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর আগে গত মাসেও একই এলাকায় গোলাগুলিতে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছিল।
এশিয়ানপোস্ট / এফআরজে