আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে উদ্ভূত টাইফুন (ঘূর্ণিঝড়) কাজিকির আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে ভিয়েতনামের পূর্ব উপকূল সংলগ্ন দুই প্রদেশ এনগে এন এবং হা-তিন। ঝড়ো হাওয়ায় প্রদেশ দু’টির বিভিন্ন গ্রাম শহরে উপড়ে গেছে গাজপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটি এবং অতিমাত্রায় ভারী বর্ষণে বন্যা দেখা দিয়েছে এনগে এন এবং হা তিন-এ।
ভিয়েতনামের আবহাওয়া দপ্তরসূত্রে জানা গেছে, চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূল থেকে রোববার শেষ রাতে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটির পূর্ব উপকূলে আছড়ে পড়ে কাজিকি। এ সময় উপকূল অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ পৌঁছেছিল ঘনটায় ১৬৬ কিলোমিটার পর্যন্ত। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের গতিবেগ কমে আসে, সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে বৃষ্টির মাত্রা।
এনগে এন প্রদেশের পর্যটন শহর কুয়া লো-এর বাসিন্দা ড্যাং জুয়ান ফুওং (৪৮) জানান, ঝড় আছড়ে পড়ার সময় সাগরে জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়েছিল এবং শহরের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন।
“ঝড়ের সময় জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়েচিল এবং সে সময় এক একটি ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল প্রায় ৬ ফুটের কাছাকাছি। পুরো শহরে ঢুকেছে সাগরের পানি।”
ভিয়েতনামের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ঝড়ের কারণে এনগে এন এবং হা-তিন প্রদেশের হাজার হাজার বাড়ি-ঘরের চাল উড়ে গেছে। এ দু’টি প্রদেশের স্থানীয় বাসিন্দারা সাগরের অগভীর এলাকায় খুঁটি ও জাল দিয়ে ভাসমান পদ্ধতিতে মাছ চাষ করেন। সেসব খামারও ভেসে গেছে।
ঝড়ের করণে এনগে এন এবং হা-তিন প্রদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিমান বন্দর রোববারই বন্ধ ঘোষণা করেছিল ভিয়েতনামের সরকার। দেশটির আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, চলতি বছর যত টাইফুন আঘাত হেনেছে ভিয়েতনামে, সেসবের মধ্যে কাজিকি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী।
এদিকে সোমবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের গতিবেগ সহনীয় পর্যায়ে আসার পর এনগে এন এবং হা-তিনের বন্যা কবলিত এলাকাগুলো থেকে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার কাজ শুরু করেছে ভিয়েতনামের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা। এক বিবৃতিতে দেশটির সরকার জানিয়েছে, ১৬ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি সেনা এবং আধাসামরিক বাহিনীর ১ লাখ ৭ হাজার সদস্য উদ্ধার তৎপরতায় নিয়জিত আছেন।
দক্ষিণ চীন সাগরের সঙ্গে দীর্ঘ তটরেখা থাকার কারণে ভিয়েতনামকে নিয়মিতই ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মতো দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়।
সূত্র : রয়টার্স