বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ০২:৩৬ অপরাহ্ন
নোটিশ :
Eid Bazar ! Eid Bazar ! Held on 30th March Saturday @ Paterson Firemanhall, Adress 226 Walnut ST, Paterson, NJ 07522 /  9th International Women's Day Award Held on April 27, 2024 @ The Brownston, 251 West Broadway, Paterson, NJ .7522 Ticket 70 Dollar Per Person Get Tickets From www.eventbrite.com

চীনা ‘জে-১০সি’ যুদ্ধবিমানের সাফল্যের রহস্য কী

রাজু / ৩৬ বার
আপডেটের সময় : বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ০২:৩৬ অপরাহ্ন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৯৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে চীন ছিল একটি নিম্ন আয়ের দেশ। তখন দেশটির প্রতি ১০ জনের ৯ জন চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করতেন। দেশটির বর্তমান যে শিল্প খাত, তখন সেটির অস্তিত্ব ছিল না বললেই চলে। কিন্তু কোনো প্রতিবন্ধকতা আধুনিক চীনের রূপকার দেং জিয়াওপিংকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। তিনি এক দশক ধরে দেশটির নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ সময় একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী বিমান তৈরির কর্মসূচি গ্রহণ করেন। এর লক্ষ্য ছিল মূলত স্থানীয় প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে এমন একটি যুদ্ধবিমান তৈরি, যা নিশ্চিতভাবে পশ্চিমাদের তৈরি বিমানগুলোকে মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে।

নতুন ধরনের এই চীনা যুদ্ধবিমান তৈরির কাজটি এতটাই ব্যাপক ও দীর্ঘ ছিল যে তা দেং জিয়াওপিংয়ের ১১ বছরের শাসনকালকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। দেংয়ের উত্তরসূরি চীনের প্রেসিডেন্ট জিয়াং জেমিন ১৯৯৪ সালে একবার যুদ্ধবিমান নির্মাণকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে বলেছিলেন, চীন এমন একটি যুদ্ধবিমান তৈরি করছে, যা পারমাণবিক বোমার চেয়ে বেশি কার্যকর।

পুরোপুরিভাবে জে-১০ যুদ্ধবিমান তৈরি করতে চীনের প্রায় আড়াই দশক সময় লেগেছিল। এটি এমন একটি প্রাণঘাতী যুদ্ধবিমান, যা আকাশযুদ্ধে যেমন সক্ষম, তেমনি স্থলভাগে আঘাত হানার ক্ষেত্রেও সমান দক্ষ। ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি (২০০৪-২০০৬) যুদ্ধবিমানটি চালু করা হয় এবং ২০১৮ সালে এটি যুদ্ধ খাতে যুক্ত হয়।

তবে ৭ মে ভোররাতে এই যুদ্ধবিমান প্রথমবারের মতো সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে হওয়া এ আকাশযুদ্ধকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় আকাশযুদ্ধ হিসেবে ধরা হচ্ছে। চীনের ঘনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্য মিত্র পাকিস্তানই চীনের বাইরে একমাত্র দেশ, যাদের কাছে রয়েছে জে-১০সি যুদ্ধবিমান। এটি চীনা যুদ্ধবিমানটির তৃতীয় ও সর্বশেষ সংস্করণ।

পাকিস্তান বিমান বাহিনী (পিএএফ) দাবি করেছে, তারা ৭ মে আকাশযুদ্ধে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের নির্মিত অত্যাধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমান। এর আগে রাফাল ভূপাতিত করার ঘটনা ঘটেনি। তবে ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ) এখনো কোনো যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করেনি। যদিও মার্কিন ও ফরাসি কর্মকর্তারা রাফাল ভূপাতিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ফরাসি বহুমুখী যুদ্ধবিমান রাফাল বিশ্বের অন্যতম উন্নত ও ৪ দশমিক ৫ প্রজন্মের বিমান হিসেবে পরিচিত। ভারত ২০২০-২২ সালে এই বিমানগুলো সংগ্রহ করেছিল। এটি এখন আইএএফের আকাশবহরের সর্বোচ্চ শক্তির প্রতীক।

পশ্চিমা বিশ্বের পরীক্ষিত যুদ্ধবিমানের বিরুদ্ধে জে-১০সির এই প্রথম সফল লড়াই এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক তৈরি করেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা ৭ মের আগপর্যন্ত একে অনেকটা অনীহা নিয়েই ‘মার্কিন এফ-১৬-এর প্রায় সমমানের যুদ্ধবিমান’ হিসেবে উল্লেখ করতেন।

 

অন্য সবকিছু সমান ধরে নিলে কি বলা যায়, তুলনামূলক কম দামের চীনের জে-১০সি এখন রাফালের উপযুক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে? আন্দ্রেয়াস রুপ্রেখট একজন সামরিক বিমান বিশেষজ্ঞ এবং চীনা যুদ্ধবিমান নিয়ে লেখা সাতটি বইয়ের লেখক। তিনি টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে বলেন, জে-১০সি এবং রাফালের তুলনা করা এ মুহূর্তে অনেকটা সরলীকরণ হয়ে যাবে। কারণ, চীনা যুদ্ধবিমানের কর্মদক্ষতা নিয়ে এখনো সীমিত তথ্য হাতে এসেছে।

এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ভারত হয়তো তাদের রাফাল যুদ্ধবিমানের ক্ষমতা অতিমূল্যায়ন করেছে কিংবা চীনা যুদ্ধবিমানগুলোকে অবমূল্যায়ন করেছে। সুইস ফেডারেল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের সামরিক প্রযুক্তিবিষয়ক জ্যেষ্ঠ গবেষক মাওরো জিলি বলেন, ৭ মের আকাশযুদ্ধ সম্পর্কে খুব কম তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। এ কারণে ওই প্রশ্নের নির্দিষ্ট উত্তর দেওয়া কঠিন।

এই গবেষক টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে বলেন, ‘অনেক কিছু আমরা এখনো জানি না। রাফাল ভূপাতিত হওয়ার কারণ হতে পারে বৈমানিকের ভুল, অভিযান পরিকল্পনাকারীদের ভুল বা অন্যদের ভুল।’১৯৮০–এর দশকের গোড়ার দিকে চীনে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতি ১০ শিশুর মধ্যে ৪টিই দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টির কারণে খর্বকায় ছিল। তবু দেশটি যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া বা ফ্রান্সের মতো শীর্ষ বিমান নির্মাতাদের কাছ থেকে সরাসরি না কিনে নিজেরা বিমান তৈরির জন্য বিপুল অর্থসম্পদ বরাদ্দ করে।

নতুন ধরনের যুদ্ধবিমান তৈরি করতে সাধারণত প্রযুক্তি ও বৈশিষ্ট্যের ৩০ শতাংশের একেবারে নতুন করে নকশা করতে হয়। তবে জে-১০ যুদ্ধবিমান নির্মাণে ৬০ শতাংশ প্রযুক্তি সম্পূর্ণ নতুনভাবে উদ্ভাবন করতে হয়েছিল। কারণ, সে সময় চীনের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ছিল তুলনামূলকভাবে বেশ পিছিয়ে। মাওরো জিলি বলেন, ‘চীন বৈধ ও অবৈধ উভয় উপায়ে বিদেশি দক্ষতা অর্জনের ওপর নির্ভর করেছিল, যা তারা ওই সময় থেকেই অব্যাহত রেখেছে।’

এশিয়ান পোস্ট/আরজে


এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর